আতংক না হয়ে প্রতিরোধ জরুরী

Spread the love

সৈয়দ জুয়েল: পুরো ইউরোপ জুড়েই এখন করোনা ভাইরাস আতংক। প্রবাসে সাধারন মানুষের পাশাপাশি বাংলাদেশী ডাক্তাররাও আছেন উদ্বিগ্নে। ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন (রুবেল)। এম,বি,বি,এস, এম,আর,সি,পি, (মেডিসিন বিশেষজ্ঞ) সৌদি আরবের মদীনায় একযুগ ডাক্তারি পেশায় কাটিয়ে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনের জেমস্ কনোল্লী হাসপাতালে কর্মরত। করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি থেকে শুরু করে প্রতিকার নিয়ে কথা বলেছেন ডেইলি নাগরিকের সাথে-
১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লুর সাথে অনেকটা মিল খুঁজে পেয়ে ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন বলেন- দিন যতই অতিবাহিত হচ্ছে করোনা নিয়ে ততই আতংক বাড়ছে পৃথিবী জুড়ে। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোতে এর নেতিবাচক প্রভাব ভাবিয়ে তুলছে সাধারনের মনে। আমেরিকার সাম্প্রতিক এক গবেষনায় সাধারন ফ্লুতে ২৭ থেকে ৭০০০ বছর মানুষ আক্রান্ত হত, এতে ৬৫ বছরের উপরে বয়স্কদের মৃত্যুর হার যেখানে ১%,সেখানে কভিড-১৯ মৃত্যুর হার ৮%। ৭০-৮০ বছরের বৃদ্ধদের মৃত্যু হার আরো এগিয়ে ১৫%। তবে বিষ্ময়কর হলো-যেখানে সাধারন ফ্লুতে ১৮ থেকে ৫০ বছরের বয়সের মৃত্যুর হার ছিল ০.২% সেখানে করোনার মৃত্যুর হার বেড়ে দাড়াবে দশগুন।
রোগটি নির্নয়ের বিষয়ে ডাঃ মোসাব্বির জানান, সাধারন জ্বরের মত কাঁশি, গলা ব্যাথা, অনেক সময় নিউমোনিয়ার সিন্টমের মতও হয়। ২ থেকে ১৪ দিন এ সিন্ট্রমটা থাকে। সাধারন চিকিৎসায় এটা সেড়ে যায়,তবে যাদের ইমুইউন সিস্টেম দূর্বল থাকে, বিশেষ করে বৃদ্ধদের যাদের- হার্ট, পাকস্থলী, লিভার, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, ধুমপায়ীদের মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায়। যেহেতু এ ভাইরাসটির প্রতিষোধক এখনও তৈরী হয়নি, তাই প্রতিকারের জন্য আক্রান্তের ২ মিটারের ভিতর ১৫ মিনিট থাকলে তার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশী, পাশাপাশি আক্রান্ত যদি বাড়ীতেই থাকেন, তার স্পর্শের জায়গাগুলো থেকেও ছড়াতে পারে এ ভাইরাস।
যেহেতু এ ভাইরাসটি বাতাসে তেমন ছড়ায়না,তাই মাস্ক জরুরী নয় কাঁশি বা ঠান্ডাজনিত রোগ যাদের আছে আর স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য এটা জরুরী। রুম টেম্পারেচারে এ ভাইরাসটি দুদিন পর্যন্ত থাকতে পারে আর তাই ঘর থেকে বাহিরে চলাচল পুরোটা সময় সাবধানে চলার পরামর্শ এ অভিজ্ঞ চিকিৎসকের।
শপিং মল, ট্রাভেল না করা, কাঁশি বা হাঁচির সময় টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলে বিনে ফেলে দেয়ার পরামর্শও তার। তবে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ হলো হাতকে জীবানুমুক্ত রাখা, আর তাই কম পক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে জীবানুনাশক দ্রব্যাদি দিয়ে হাত ধোয়ার বিকল্প নেই। আয়ারল্যান্ডে ভাইরাসটি যদি ইতালীর মত ভয়াবহ রুপ নেয়, তার জন্য আমরা কতটা তৈরী? এ বিষয়ে তিনি বলেন- আয়ারল্যান্ড ৭৫% চিকিৎসক অন্য দেশের। স্বাস্থ্য কর্মী অনেক কম আমাদের।
ইতালীর মত ভয়াবহ অবস্থা হলে সবচেয়ে বড় শংকট হবে আই,সি,ইউর বিছানার। এটা অপ্রতুল। তাই কঠিন চ্যালেন্জের মুখে পরতে পারে এ সেবা খাতটি। বাংলাদেশের বরিশাল শহরের এ গুনী অভিজ্ঞ চিকিৎসক দেশ ছেড়ে বিদেশের মাটিতেও সুনাম কুড়িয়েছেন বেশ। করোনা ভাইরাসটি তার জীবানু ছড়ানোর ধরন পাল্টে ফেলায় উদ্বিগ্ন বেশ। আর তাই প্রতিরোধে যথেস্ট সাবধানতা অবলম্বন একান্তই জরুরী। একটু সাবধান হলে অনেক মৃত্যু রোধ করা সম্ভব বলেও মত ব্যাক্ত করেন এ গুনী মানুষটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *