পটুয়াখালীতে বিচারকের বাসায় টাকার বান্ডিল, পিপির সদস্য পদ স্থগিত

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট
পটুয়াখালীতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারককে ‘ঘুষ দিতে’ তার বাসায় টাকার বান্ডিল পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) বিরুদ্ধে। ঢাকা বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর অভিযোগটি দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (সিনিয়র জেলা জজ) নিলুফার শিরিন।
অভিযোগ ওঠায় পিপি মো. রুহুল আমিনের সদস্য পদ স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হুমায়ুন কবির। একই সঙ্গে তাকে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে বিচারক নিলুফার শিরিন বলেন, নারী ও শিশু আদালতের একটি মামলায় জামিনের জন্য বিচারকের মোবাইল নম্বরে বার বার সুপারিশ করেছিলেন পিপি রুহুল আমিন। পরে বুধবার সকাল ৯টায় তার বাসার গৃহপরিচারিকার মাধ্যমে মামলার নথিপত্রসহ ৫০ হাজার টাকার একটি বান্ডিল পাঠান তিনি। এছাড়া আলোচিত জুলাই শহীদের মেয়ের ধর্ষণ মামলায়ও আসামিপক্ষের হয়ে যোগাযোগ করার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

অভিযোগে বিচারক উল্লেখ করেন, “এভাবে ঘুষ পাঠানোতে আমি মানসিকভাবে অত্যন্ত অপমানিত এবং তীব্র রাগবোধ করছি। অফিসে গিয়ে আমি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা জজের সরকারি কৌঁসুলিকে বিষয়টি অবহিত করি ও প্যাকেটটি দেখাই।

“তারাও প্রচণ্ড রাগান্বিত হন এবং আমাকে বিষয়টি ছোট করে না দেখার পরামর্শ দেন। আমি আশা করি অভিযুক্ত পিপির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অভিযোগের অনুলিপি আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও পটুয়াখালী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর বরাবরেও পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিচারক।
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, “একজন পাবলিক প্রসিকিউটর সরকারের পক্ষে না থেকে আসামিপক্ষের হয়ে বিচারককে ঘুষ দেওয়ার ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক।
বৃহস্পতিবার জরুরি সভায় বেশিরভাগ আইনজীবীর উপস্থিতিতে তার সদস্য পদ সাময়িকভাবে স্থগিত এবং সাত দিনের মধ্যে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে।”
পটুয়াখালী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মজিবুর রহমান টোটান বলেন, “অনুলিপি পেয়ে বিষয়টি অবগত হয়েছি। বিজ্ঞ বিচারকের অভিযোগের কপি পেয়ে জেলা আইনজীবী সমিতি জরুরি সভা ডেকে তার সদস্য পদ স্থগিত করেছেন। ঢাকা বার কাউন্সিল তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”

তবে ঘুষ দেওয়া বা টাকা পাঠানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আইনজীবী রুহুল আমীন। এ ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই জানিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি পাবলিক প্রসিকিউটর হওয়ার পরই আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।”