আমতলী প্রতিনিধি ॥ প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তা-বে সাগরে নিখোঁজ এফ বি তরিকুলের ৭ জেলে ৭ দিনে ফিরে না আসায় তালতলীর জেলে পরিবারে চলছে শোকের মাতম । বাবা মজা নিয়ে আসবে এ অপেক্ষায় নিখোজ রাসেল হাওলাদারের কন্যা সন্তান নাইমা । তারমত আরো অনেকেই বাবার অপেক্ষায় দিনাতিপাত করছে। নিখোজ জেলেদের পরিবারের আহাজারীতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। কর্মক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে জেলে পরবিারগুলো দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
জানা গেছে, প্রলয়ংকারী ঘূর্নিঝড় বুলবুলের তান্ডবে তালতলীর একটি মাছ ধরা ট্রলার ১৫ জেলে নিয়ে নিখোজ হয়। নিখোজ জেলেদের মধ্যে ৮ জেলে ২ দিন পরে ফিরে আসলেও বাকী ৭ জেলে এখনো নিখোজ রয়েছে।
নিখোজ জেলেদের মধ্যে তালতলীর লালুপাড়া গ্রামের রাসেল হাওলাদারের (৩০) ১৮ মাসের সন্তান নাইমা বাবার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে । কখন আসবে বাবা মজা নিয়ে । শিশু সন্তানের বিলাপে পরিবারটির সদস্যরা পাগল প্রায়।
মুখ লুকিয়ে সন্তানকে সান্ত¡না দিচ্ছে তার মা। বাড়িতে বিলাপ করে কাঁদছে রাসেলের মা ও বোন, তাদের বিলাপে সকলের চোখেই পানি । রাসেলের বাড়ি থেকে একটু সামনে আগাতে নিখোজ সবুজের বাড়ি। এইচএসসি পাস করে সংসারের হাল ধরতে বড় ভাই জসিমের সাথে ৩ নভেম্বর সাগরে যায় সবুজ। ৮ নভেম্বর সকালে তীরে ফিরতেছিল ট্রলারটি। পথিমধ্যে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায় ট্রলারের । প্রবল ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায় ট্রলারটি। সাগরে হারিয়ে যায় মো. হোসেন আলী (৫৫),শানু হাওলাদার (৫৫), মো. লিটন (৫০), মো. কামাল হোসেন (৩৮),সুমন (৩০)মো. রাসেল হাওলাদার (৩০) সবুজ ফরাজী (১৮)।
নিখোঁজ সন্তানের ছবি বুকে নিয়ে কাঁদছে সবুজের মা।দুই ভাই একত্রে সাগরে মাছ ধরতে গেলেও বড় ভাই জসিম ফিরে আসলেও নিখোজ হয় সবুজ। চোখের সামনে ভাইকে হারিয়ে পাগল প্রায় বড় ভাই জসিম।
গত( ৮ নভেম্বর) শুক্রবার রাতে বুলবুলের আঘাতে ডুবে যায় এফ বি তরিকুল নামে একটি মাছ ধরার ট্রলার। ঐ ট্রলারে থাকা ১৫ জেলের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে ৮ জেলে বাড়ি ফিরে আসলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছে ৭ জেলে।
ফিরে আসা জেলে মোস্তফা জানান, বরগুনার তালতলী উপজেলার লালুপাড়া গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের মালিকানাধীন এফবি তরিকুল নামের একটি ট্রলার ৩ নভেম্বর গভীর সাগরে মাছ ধরতে যায় । ট্রলারটি তীরে ফেরার পথে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তা-বে নারিকেল বাড়িয়ায় ডুবে যায়।
২০১৯-১১-১৫