সৌদিতে চাকুরী হারানোর ঝুকিয়ে কয়েক লাখ বাংলাদেশী

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব। দেশটিতে বর্তমানে বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত রয়েছেন প্রায় ২২ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক। করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে গত তিন মাসে লাখেরও বেশি মানুষের সে দেশে যাওয়া আটকে গেছে। এদের অর্ধেকেরও বেশি ছুটি কাটাতে দেশে এসে আর ফিরতে পারেননি।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মার্চে ফ্লাইট চলাচল বন্ধের আগ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দুই লাখের বেশি অভিবাসী শ্রমিক ফেরত এসেছেন। তবে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মার্চে ফ্লাইট চলাচল বন্ধের আগ পর্যন্ত সৌদি আরব থেকে ৪১ হাজারের মতো শ্রমিক দেশে ফিরেছেন। পরে চার্টার্ড বিমানে ফিরেছেন আরও ১৩ হাজারের বেশি। এদেরও একটি বড় অংশ সৌদি আরব থেকে আসেন। এ ছাড়া গত তিন মাসে সৌদি আরবে যাওয়ার কথা ছিল এমন শ্রমিকের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি।

বাংলাদেশ থেকে গড়ে ৫০-৬০ হাজারের মতো শ্রমিক প্রতি মাসে বিদেশে কাজের জন্য যান। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশটি যান সৌদি আরবে। দেশটিতে গত জানুয়ারি মাসেও গেছেন অন্তত ৫২ হাজার, ফেব্রুয়ারিতে ৪৪ হাজার আর মার্চে ফ্লাইট বন্ধের আগ পর্যন্ত গেছেন ৩৮ হাজার।
সম্প্রতি সৌদি আরবের ইংরেজি দৈনিক সৌদি গেজেটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মহামারীর কারণে এ বছর সৌদির শ্রমবাজারে ১২ লাখ বিদেশি কর্মী চাকরি হারাবেন। একটি স্থানীয় গবেষণা সংস্থার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, নির্মাণ খাত, পর্যটন (হজ), রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন খাতে এই চাকরিচ্যুতি ঘটতে পারে।
বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে সৌদি আরবের রিয়াদ দূতাবাস এবং জেদ্দা কনস্যুলেট জেনারেলের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে, যেন সেখানে বাংলাদেশি কর্মীরা বিপদে না পড়েন। তিনি জানান, যাদের বৈধ পাসপোর্ট এবং আকামা রয়েছে, তাদের চুক্তি যেন বহাল থাকে সেজন্য জেদ্দা-রিয়াদে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ আন্তঃমন্ত্রণালয় আলোচনা চলছে।

করোনার কারণে সৌদি আরবে কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় করণীয় সম্পর্কে অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সবার আগে সুস্থ থাকতে হবে। করোনা সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকতে হবে, শারীরিক সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। সুস্থ না থাকলে সৌদি আরবসহ কোনো দেশেই বিমান ভ্রমণ করা যাবে না এবং গেলেও চুক্তি বহাল থাকবে না; আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। মানসিকভাবে সুস্থ থাকার চেষ্টা করতে হবে; বর্তমান পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন, হালনাগাদ তথ্যের দিকে চোখ রাখুন; নতুন কোনো দক্ষতা অর্জনের চেষ্টা করুন এবং বিদেশে শ্রমিক হিসেবে নিজের অধিকার সম্পর্কে জানুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *