বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ : আন্তকোন্দলে হোচট খেলো বরিশালে

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায় আন্দোলনের শুরুতেই হোচট খেয়েছে বিএনপি। এই দাবিতে গত বৃহস্পতিবার বরিশালে অনুষ্ঠিত প্রথম বিক্ষোভ সমাবেশ নিজেদের কোন্দলেই পন্ড হওয়ার উপক্রম হয়েছিলো দলটির। সিনিয়র নেতাদের সামনে স্থানীয় ছাত্রদলের দুই গ্রুপের দফায় দফায় লাঠালাঠি-চেয়ার ছোড়াছুড়ি দেখে বিস্মিত সচেতন মহল।
নানা বাঁধা বিপত্তি উতরে সফলভাবে সমাবেশ আয়োজনের পরও তাদের সহিংসতা জনমনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার সু-নির্দিস্ট এজেন্ডা নিয়ে আগানো দলটির এ অন্তকলহে খুশী তাদের কর্মী-সমর্থকরাও। এ ঘটনা ভাবিয়ে তুলছে দলটির নীতি নির্ধারকদেরও।

সমাবেশে ছাত্রদল নেতাকমর্ীদের চেয়াের ছোড়াছুড়ি

নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের আন্দোলনের শুরুতেই দলের আন্তসংঘাতে বিরক্ত হয়ে বরিশালের প্রথম সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মঞ্চের কাছে শ্লোগান না দিয়ে রাস্তায় গিয়ে শ্লোগান দেবেন, মিছিল করতে হয় রাজপথে করবেন। আগুন দিতে হয় সরকারের গদিতে দেবেন। শ্লোগান দিয়ে সংঘাতে (?) জড়িয়ে সমাবেশ নস্ট করবেন না।

দেশব্যাপী নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ে সারাদেশের সব বিভাগীয় সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচী শুরু করেছে বিএনপি। যার প্রথমটি গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে বরিশালে। সরকার বিরোধী সমাবেশ হওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচী ঘোষনার পরও সরকারের নমনীয়তা এবং পুলিশের অনুমতি পাওয়া নিয়ে সংশয়ে ছিলো নীতিনির্ধারকরা। সমাবেশের আগের রাতে পুলিশের মৌখিক সন্মতিতে আস্বস্ত হয় বিএনপি নেতারা।

সমাবেশে ছাত্রদল নেতাকমর্ীদের চেয়াের ছোড়াছুড়ি

সমাবেশ শুরুর কয়েক ঘন্টা আগে জিলা স্কুল মাঠের আশেপাশে সাজোয়া যান, জলকামান এবকং রেকার সহ মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। সারা শহরের মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন করে জমায়েত ¯্রােত আটকে দেয়ার চেস্টা করা হয়। এক পর্যায়ে বিকেল ৩টা থেকে অঘোষিতভাবে শহরের থ্রি হুইলার যান চলাচল আটকে দেয়। মোড়ে মোড়ে সরকার দলীয় কর্মদীদের হামলা-ধাওয়া খেয়েও শেষ পর্যন্ত সমাবেশ সফল হয়েছে বলে মনে দাবী করেন আয়োজক সংগঠন মহানগর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া।

কিন্তু সমাবেশের মাঝপথে কেন্দ্রিয় নেতাদের সামনে ছাত্রদলের দুই গ্রুপ দফায় দফায় লাঠিসোটা নিয়ে চেয়ার ছোড়াছুড়ি করে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে সমাবেশ প্রায় পন্ড হতে চলেছিলো। হামলার হাত থেকে নেতাকর্মীরা বাঁচতে দিগি¦দিক ছোটাছুটি করে বাঁচার চেস্টা করায় জিলা স্কুল মাঠ অনেকাংশ ফাঁকা হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু কেন্দ্রিয় নেতারা শক্তহাতে পরিস্থিতি সামাল দেয়ায় কোনমতে রক্ষা হয়েছে।

দাবী আদায়ের আন্দোলনের নিজেদের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনাকে একটা নেতৃত্বশূন্য আগোছালো সমাবেশ বলে মন্তব্য উল্লেখ করেছে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শাহ সাজেদা। বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি শাহ সাজেদা বলেন, বিএনপি’র মতো একটা বয়োজ্যেষ্ঠ দলের কাছে এমন দায়িত্বহীন আচরন তাদের দলের লোকজন, সমর্থক এবং সাধারন নাগরিক কেউ আশা করেন না। তারা নিজেরা সংঘাতে জড়িয়ে দৈন্যতার পরিচয় দিয়েছে। আগামী নির্বাচনে এই অদূরদর্শীতার ফল এই দলটি ভোগ করবে, যদি না তারা শোধরায়, রাজনৈতিক ম্যান্ডেট মেনে না চলে।

মহানগর যুবদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান শামীম বলেন, দল অনেক বড়। মত পার্থক্যও অনেক বেশী। এটা হওয়া উচিত না। এভাবে দাবী আদায়ে সম্ভব নয়। একমাত্র ঐক্য ঐক্য ঐক্য-ই পারে কাখিংত লক্ষ্যে পেঁৗঁছতে পারে। এ জন্য প্রত্যেকের ব্যক্তিগত স্বার্থকে জলাঞ্জলী দিয়ে. ভেদাভেদ ভুলে দলের বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবব্ধ হতে হবে।

বিএনপি কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, একটি আন্দোলনের সফল সূচনা যারা (স্থানীয় বিবাদমান দুই গ্রুপ) কলুসিত করার চেস্টা করেছে তাদের ছাড় দেবেনা বিএনপি। সমাবেশ চলার মধ্যেই ওই ঘটনার ছবি সহ যাবতীয় প্রমান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যানের কাছে পৌঁছে গেছে। কেন্দ্রিয় ছাত্রদলও ওই সংঘাতে জড়িয়ে পড়া স্থানীয় ছাত্রদলের দুই গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। জনগনের সমর্থন আদায়ের এই সংগ্রাম বেগবান করতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করছেন। ##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *