আকাশে উড়ল ৯ বছরের সায়রা

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : আকাশে উড়তে উড়তে সমুদ্র দেখতে কেমন? এটা বর্ণনা দেওয়া সম্ভব? হয় তো না, হয়তো কেউ সেই গভীর অনুভূতির কিছুটা প্রকাশ ঘটাতে পারে। পরিচ্ছন্ন, মেঘমুক্ত আকাশে প্যারাসুটের ওপর ভর করে ঘুরছেন আর নিচে নীল সমুদ্র। একেকটা বড়বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে সৈকতে। ভয় যদি কিছুটা লাগে তাহলে সেটা কেমন? বুকের রক্ত ছলকে ওঠার মতো?

কক্সবাজারে প্যারাসেইলিং হয়। কলাতলি বিচ থেকে মেরিন ড্রাইভ রোদ ধরে ইনানির দিকে যাওয়ার সময়ই বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকত। তারই একপাশে সৈকতে প্যারাসুট উড়ছে। লাক্স তারকা বাঁধনের ৯ বছরের মেয়ের সাহসের তারিফ করতেই হয় বটে। যে বয়সে বাচ্চারা নাগরদোলায় উঠে চিৎকার চেঁচামেচি করে অস্থির করে দেয়, সেই বয়সে সায়রা সমুদ্রের ওপর ভেসে বেড়াল।
অনুমান করা যায় মঙ্গলবারের ঘটনা। রক্তচাপ পরীক্ষার পর লাইফ জ্যাকেট পরানো হলো সায়রাকে। এরপর মাটিতে পড়ে থাকা প্যারাস্যুটের দড়ি ধরে দৌড়ে এলেন একজন। রংধনু রঙের বিশাল প্যারাস্যুটের বেল্ট কোমরে বেঁধে দেওয়া হলো তাঁর। এরপর স্পিডবোট ছুটতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে আকাশে উড়ল সায়রা। সাধারণত প্যারাসেইলিং একাই করতে হয়। এক্ষেত্রে সায়রার একজন সহযোগী ছিল।

অবশ্য মেয়ের আগে বাঁধনও উড়েছেন। মা’কে দেখে ৯ বছরের কন্যার সাহস সঞ্চিত হয়েছে। এই ওড়াউড়িকে বলে প্যারাসেইলিং। বিশ্বের প্রায় সব দেশের সমুদ্রসৈকতের অন্যতম আকর্ষণীয় একটি রাইড। পাহাড়ে যেমন জনপ্রিয় প্যারাগ্লাইডিং তেমন সাগরে প্যারাসেইলিং।

শুধু প্যারাসেইলিং নয় জেট স্কি ( সমুদ্রের বিশেষ জলীয় যান) মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে সমুদ্রের চার কিলোমিটার ভেতরে চলে গিয়েছিলেন।
বাঁধন বলেন, ‘কক্সবাজারের মেয়েকে নিয়ে সব রোমাঞ্চকর কাজ করেছি। এটা দারুণ উপভোগ্য, ভয় মেশানো আনন্দের। সমুদ্রের ঢেউকে অতিক্রম করে চার কিলোমিটার ভেতরে চলে গিয়েছি এটা যেমন রোমাঞ্চকর ছিল, আরেক ধরনের রোমাঞ্চকর ছিল প্যারাসেইলিং। এটা বলে বোঝাতে পারবো না। সায়রা অনেক সাহসী। তার তেমন ভয় নেই।’

বিচ্ছেদের পর মেয়েকে নিয়ে একাই থাকেন অভিনয়শিল্পী ও মডেল মা আজমেরী বাঁধন। ছোট্ট সায়রার কাছে এখন বাঁধনই তার মা ও বাবা। বাঁধনের জগতটাই মেয়েকে ঘিরে। মেয়েকে বাঁধন বাবা-মায়ের ভালোবাসা দিয়েই গড়ে তুলছেন।
মা-মেয়েকে দেখা গেল কক্সবাজারে। বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকতে মেয়েকে নিয়ে আনন্দময় সময় কাটাচ্ছেন। মা-মেয়ে দুজনের আনন্দ নেটিজেনদেরও আনন্দিত করছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বাঁধন বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রাপ্ত বয়স্ক হলেও সন্তানরা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। অধিকার ফলানোর একটা ব্যাপার থাকে। আমার ক্ষেত্রে সেটা হবে না, আমি চাই মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হলে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নেবে। আমি আমার মেয়েকে, মেয়ে সন্তান নয়; একজন মানুষ হিসেবে বড় করে তুলতে চাই, মানবিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
বাঁধনের মেয়ে সায়রার বয়স এখন ৯ বছরের কাছাকাছি। বাবার বিচ্ছেদের পর মায়ের কাছেই থাকে সায়রা। সায়রার বাবার সঙ্গে একেবারে কম দেখা হয় বলে জানা গেছে।

বাঁধন বলেন, ‘উনি আসেন না, বাচ্চার ভরণপোষনের দায়িত্ব নেন না। তারপরেও আদালত থেকেই কিন্তু সপ্তাহে দুদিন বাবাকে তাঁর মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছে। মেয়ের মনোজগতে যাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে, তাই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমিও চাই মেয়েটা যেহেতু ছোট; দুদিন নয়, চাইলে যখন ইচ্ছে তখন আসুক। কিন্তু ২০১৭ সালের ২ আগস্টের পর করোনায় সায়রার বাবা দেখা করেছে! যাই হোক আমার মেয়েকে আমি মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *