ভ্রুন হত্যা করে ফ্রিজে রেখেছিলেন মা

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বেলুহার গ্রামের আব্দুর রশিদ ভূইয়া নামে এক ব্যক্তির ঘরের ব্যবহৃত ফ্রিজ থেকে পাঁচ মাস বয়সী মানব ভ্রুণ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সকালে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃস্টি হয়েছে। এ নিয়ে এলাকার মানুষ মধ্যে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এর আগে বুধবার বিকেলে স্থানীয় কোন ব্যক্তি ৯৯৯ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। এরপর পুলিশের এক এসআই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

বেলুহার গ্রামের আব্দুর রশিদ ভূইয়ার মেয়ে নিলু জানান, প্রতিবেশী সিরাজ ভূইয়া ও মাহমুদা বেগমের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (২৩) রোজার মাঝামাঝি সময়ে একটি প্লাস্টিকের কৌটা তাদের ফ্রিজে রেখে আসেন। বুধবার বিকেলে ফ্রিজ পরিস্কার করতে গিয়ে ওই প্লাস্টিকের কৌটাটি সুমাইয়াকে নিয়ে যেতে বলেন। সুমাইয়ার আসতে দেরি দেখে কৌতুহলবশত নিলু ওই কৌটা খুলে তার মধ্যে মানব ভ্রুণ দেখতে পান। বিষয়টি নিলু বাড়ির লোকজনকে জানিয়ে সুমাইয়াকে খবর দেন। সুমাইয়া আসলে ভ্রুণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়। সুমাইয়া প্রথমে এটি বিড়ালের বাচ্চার ভ্রুন বলে জানান। পরে স্থানীয় লোকজন এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে সুমাইয়া নিজের গর্ভের ভ্রুণের কথা স্বীকার করেন। সুমাইয়া জানান, কয়েক মাস আগে গর্ভবতী হন। গর্ভ ধারনের ৫ মাস পরে নিজেই গর্ভের ভ্রুণ নষ্ট করেন এবং রোজার মাঝামাঝি সময়ে ওই ভ্রণ প্রসব করেন। প্রসবের পরেই ভ্রুণটি একটি প্লাস্টিকের কৌটায় করে সুমাইয়া নিজেই রশিদ ভূইয়ার ফ্রিজে রেখে এসেছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, তিন বছর আগে সুমাইয়া আক্তারের সাথে পার্শ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার বিল্বগ্রাম এলাকার সত্তার ঘরামীর ছেলে জামাল ঘরামীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের প্রায় দেড় বছরপর জামাল ও সুমাইয়ার ঘরে সন্তান জন্ম নেয়। তবে জন্মের কিছুদিন পর তাদের সন্তান মারা যায়। এরপর তাদের মধ্যে পারিবারিক
কলহ সৃস্টি হয়। পারিবারিক কলহহের কারনে এক বছর আগে স্বামী জামালের সংসার ছেড়ে সুমাইয়া বাবার বাড়ি চলে আসেন। সেই থেকে সুমাইয়ার সঙ্গে জামালের কোন সম্পর্ক নেই। বাবা মা’র সাথে গত এক বছর বসবাস করে আসছেন সুমাইয়া। এসময় জামাল সুমাইয়ার বাবার বাড়িতে আসতে এলাকার কেউ দেখেনি। তা হলে সুমাইয়া কীভাবে অন্তঃসত্ত্বা হল তা এলাকার কারো মাথায় আসছে না।

তবে সুমাইয়া আক্তার জানান, স্বামী জামাল তাকে ভরণ পোষণ না দেওয়ায় তিনি আদালতে মামলা করেছেন।
জামালের সঙ্গে প্রায় ৬ মাস আগে তার শারীরিক সম্পর্ক ঘটেছিল। এতে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। ভরণ পোষণ না পেয়ে স্বামীর ওপর রাগ করে তিনি গর্ভের সন্তান নষ্ট করেন। এরপর মানব ভ্রুণটি প্রয়োজনে আদালতে দেখানোর জন্য তিনি পাশের বাড়ির ফ্রিজে রেখেছিলেন।

আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম জানান, বেলুহার গ্রামের আব্দুর রশিদ ভূইয়া নামে এক ব্যক্তির ঘরের ব্যবহৃত ফ্রিজ থেকে মানব ভ্রুণ উদ্ধারের ঘটনা ৯৯৯ এর মাধ্যমে বুধবার বিকেলে জানতে পেরে সেখানে এসআই আব্দুর রহমানকে পাঠানো হয়েছিল। সুমাইয়া পুলিশকে জানায় রোজার মাঝামাঝি সময় তার গর্ভপাত ঘটে। স্বামী মেলামেশা করলেও তাকে ভরন পোষণ দেয়না আদালতে তা প্রমানের জন্য মৃত ভ্রুনটি তিনি পাশের বাড়ির ফ্রিজে রেখেছিলেন বলে পুলিশকে জানায়। তবে ঘটনা জানাজানি হলে সুমাইয়া ভ্রুনটি মাটি চাপা দিয়ে দেয়ার কথা বলেন। এ বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ না দেয়ায় পরে পুলিশ সেখান থেকে চলে আসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *