সেই কাতল মাছটির দাম ওঠেছিল ৭০ হাজার টাকা

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দুর্গাসাগর দিঘিতে বড়শিতে ধরা পড়া প্রায় ৩০ কেজি ওজনের কাতল মাছটির ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম ওঠেছিল। মাছটি কেটে ভাগ করে নেয়ার জন্য সোমবার (১৪ জুন) রাত সাড়ে ৮ দিকে বরিশাল নগরীর পোর্টরোড মৎস্য আড়তে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মাছটি কেনার জন্য কয়েকজন অড়তদার ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বলেন। তবে মাছের মালিক দুই যুবক মাছটি বিক্রি করেননি।
নগরীর বিএম কলেজ রোড এলাকার সোহেল জমাদ্দার (৩২) ও কালীবাড়ি রোড এলাকার সুমিত কর্মকার (৩০) টিকেট কিনে দুর্গাসাগর দীঘিতে বড়শি ফেলেছিলেন। রোববার তাদের বড়শিতে ওই বিশাল কাতল মাছটি আটকা পড়ে ।
সোহেল জমাদ্দার ও সুমিত কর্মকার জানান, তারা সখ করে বিভিন্ন স্থানে টিকেট কিনে বড়শি দিয়ে মাছ ধরেন। রোববার সকালে দুই দিনের জন্য ৫ হাজার টাকা দিয়ে টিকেট কিনে দুর্গাসাগর দিঘিতে বড়শি ফেলেন। কয়েক দফায় বড়শি ফেললেও কোনো মাছ বড়শিতে ধরা পড়েনি। বিকেল ৫ টার দিকে বড়শিতে হ্যাঁচকা টান পড়ে। বড় কিছু টোপ গিলেছে বুঝা যাচ্ছিল। তবে কোনোভাবে মাছটিকে বড়শিতে আটকে রাখা যাচ্ছে না।
তাদের সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসেন আরও কয়েকজন। প্রায় ৮ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত দেড়টার দিকে কাতল মাছটি তীরে ওঠানো হয়। এতবড় কাতল দেখে সবার চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়।

সোহেল জমাদ্দার বলেন, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা দুর্গাসাগর দিঘিতে বড়শি দিয়ে মাছ ধরেন। বড় কাতল ছাড়াও ৩ থেকে ৫ কেজি ওজনের আরও ৫ টি পাঙ্গাস ও মৃগেল মাছ ধরা পড়ে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮ দিকে মাছটি কেটে ভাগ করে নেয়ার জন্য তারা পোর্টরোড মৎস্য আড়তে নিয়ে আসেন। সেখানে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে যায়। এসময় কয়েকজন আড়তদার কাতল মাছটি কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। আড়তদাররা ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বলেন।

তিনি বলেন, ৩০-৩২ কেজির বেশি ওজন হবে মাছটির। তবে মাছটি ওজন করে দেখা হয়নি। সখ করে মাছটি ধরেছি। এত বড় মাছ পাওয়া অবশ্যই ভাগ্যের ব্যাপার। লাখ টাকা দিলেও মাছটি বিক্রি করা সম্ভব ছিল না। পরে মাছ কেটে আমি ও সুমিত মিলে ভাগ করে বাসায় নিয়ে যাই। এছাড়া দুর্গাসাগর দিঘি থেকে মাছটি তুলতে সহায়তাকারী দুই জনকে মাছের কিছু অংশ দিয়েছি।
দুর্গাসাগরের কেয়ারটেকার তপন লাল লস্কর জানান, দিঘিতে বড়শিতে সাধারণত ৪-৫ কেজি ওজনের মাছ পাওয়া যায়। সচরাচর এত বড় কাতল মাছ বড়শিতে ওঠে না। গত ১০ বছরে এত বড় মাছ ধরা পড়ার নজির নেই।
মৎস্য অধিদফতরের বরিশাল কার্যালয়ের কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাস বলেন, দুর্গাসাগর দিঘির মাছের আলাদা খ্যাতি রয়েছে। দিঘির মাছ খুবই সুস্বাদু হয় বলে শুনেছি। বড় কোনো মাছ হলে তো কথাই নেই। সেখানে টিকেট কেটে সৌখিন শিকারিরা বড়শি দিয়ে মাছ ধরেন। বড়শি ধরা পড়া মাছ বাজারে ওঠে না। তাই দিঘির বড় মাছের চাহিদা সব সময়ই বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *