পাকিস্তানে টানা ভারি বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যার ফলে গত এক সপ্তাহে অন্তত ৬৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং আরও ১১৭ জন আহত হয়েছেন। বুধবার (৩ জুলাই) দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (NDMA) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
প্রকাশিত তথ্যমতে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ। সেখানে নিহতদের মধ্যে ১০ শিশু রয়েছে। শুধুমাত্র সোয়াত ভ্যালিতেই আকস্মিক বন্যায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
পূর্বাঞ্চলীয় পাঞ্জাব প্রদেশে ভবন ধস ও পানিতে ডুবে ১১ শিশুসহ ২১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলীয় সিন্ধু প্রদেশে মারা গেছেন ১৫ জন এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তানে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি আগামী শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে আরও ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।
চলতি বছর মে মাসেও তীব্র ঝড়ে দেশটিতে অন্তত ৩২ জন প্রাণ হারান। বসন্তকালেও ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি ও অন্যান্য চরম আবহাওয়া দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাকিস্তানে চরম আবহাওয়ার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। বিশ্বের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষে থাকা পাকিস্তানের প্রায় ২৫ কোটির বেশি মানুষ সরাসরি এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় দেশটির এক-তৃতীয়াংশ এলাকা পানির নিচে চলে গিয়েছিল, প্রাণ হারিয়েছিল প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন। সে সময় ঘরহারা হয় লাখো মানুষ।
দেশটির সরকার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনগুলোকে সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।