কর্মী সমাবেশ: আয়ারল্যান্ড আ’লীগে হট্টগোল, উত্তাপ

Spread the love

সৈয়দ জুয়েল, আয়ারল্যান্ড থেকে ॥ দিনভর হট্টগোলের মাধ্যমে চলে আয়ারল্যান্ড আওয়ামিলীগের কর্মী সমাবেশ। এ নিয়ে সমাবেশ স্থলে ২ পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে স্বতস্ফূর্ত ভাব নিয়ে সমাপ্ত হয়েছে কর্মী সমাবেশ।
কর্মী সমাবেশকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরেই আয়ারল্যান্ডের সোশ্যাল মিডিয়ায় আওয়ামিলীগের দু গ্রুপের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, অশালীন ভাষার ব্যাবহার আওয়ামিলীগের কর্মীদের মাঝে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। তাই এ সমাবেশ নিয়ে কর্মীদের মাঝে ছিল বাড়তি উত্তাপ।


আ’লীগ নেতা কিবরিয়া হায়দারের সভাপতিত্বে সভার শুরুতে প্রধান অতিথি অল ইউরোপিয়ান আওয়ামিলীগের সভাপতি এম, নজরুল ইসলামের আসনের সাঁরিতে বসা নিয়ে বেল্লাল-লিটন গ্রুপের কর্মীদের মাঝে তুমুল হট্টগোল বেঁধে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে প্রধান অতিথিসহ সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক হয়। শুরুতে কামরুজ্জামান নান্না সবার পক্ষ থেকে এই অনাকাংখিত ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে সভা শুরু করেন।

বক্তারা যা বললেন:
আ’লীগ নেতা স্বপন দেওয়ান: সবাই নেতা হতে চায়। নেতা হতে হলে আগে ত্যাগ করা শিখুন, তারপর নেতা হন। বঙ্গবন্ধুর জীবনটা দেখুন, সারাজীবন ত্যাগের রাজনীতি করেছেন, সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজনীতি করেন। নোমান চৌধুরী: এখানে আমরা মারামারি করতে আসিনি, সবাইকে সংযত হয়ে কথা বলার আহ্ববান জানাচ্ছি। রফিক খাঁন: আওয়ামিলীগ একটি বড় সংগঠন। এখানে কিছু মানুষের ভিন্নমত থাকতে পারে, এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কর্মী সমাবেশে শুরুতে যা হয়েছে, তা অনভিপ্রেত। এখানে আমরা টেন্ডারবাজি করতে আসিনি। দল গঠনে যাদের ভূমিকা ছিল, তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমরা চাই সাংগঠনিক দক্ষতা বাড়াতে। তাই পরিক্ষিত মুজিব সৈনিক দিয়ে দল গড়তে হবে। সাংগঠনিক দক্ষতা যাদের নেই, তাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা সঠিক হবেনা।

গালিব হক: যে ঘটনা ঘটেছে, তা অনাকাংখিত। বর্তমান নেতৃত্বের ঘাটতি আছে হয়তো, তাই দলে গ্রুপিং। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমি আশা করবো যার কাছেই নেতৃত্বের ভার দেয়া হোক না কেন, তার অধীনেই সবাইকে এক হয়ে কাজ করে আয়ারল্যান্ড আওয়ামিলীগকে আরো গতিশীল করতে হবে। দল যেন ভেঙ্গে না যায় ভূল নেতৃত্বের জন্য। এ জন্য সাংগঠনিক দক্ষতা যাদের আছে, তাদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, না হলে দল সাংগঠনিক শক্তি হারাবে।
তামিম মজুমদার: প্রধান অতিথির দিকে দৃস্টি আকর্ষন করে বলেন, আমাদের ভিতর যে বিতর্ক আছে, তার একটা সুষ্ঠ সমাধান করা হোক। যাতে করে আয়ারল্যান্ড আওয়ামিলীগ হয় এক ও অভিন্ন। দলকে শক্তিশালী করতে এর কোন বিকল্প নেই। এমন নেতৃত্ব আমাদের হাতে তুলে দিয়ে যাবেন, যাদের হাত ধরে আমরা আরো এগিয়ে যাব। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানান রকম ছবি, মিথ্যা তথ্য দিয়ে যেন কাউকে বিভ্রান্ত না করা হয়, এ জন্য সবাইকে তিনি অনুরোধ করেন। শিবলী চৌধুরী- চেয়ারের জন্য আপনারা দিশেহারা, যোগ্যতা থাকলে চেয়ারই আপনাকে খুঁজে নিবে। তিনি এ অনাকাংখিত ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করন।

সালেহ আহমেদ: অনেক নেতা আছেন,যাদের নেতৃত্বের যোগ্যতা নেই। কেন্দ্র থেকে এ খবর আসছে ও খবর আসছে কিন্তু কর্মীদের সাথে কোন জোগাজোগ নেই। আমরা এরকম নেতা চাইনা। বদরুল ইসলাম: আজ যেটা হয়েছে এটা ঠিক হয়নি। রাজনীতি করতে হলে আরো সংযত হতে হবে, একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। এরকম ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না হয়। মিজান: ২৫ জন দিয়ে আমরা দল গঠন করেছিলাম আজ অনেক সদস্য। দলে অনেক নুতন মুখ এসেছে। এরা সবাই হাইব্রিড নয়। যারা আছেন তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্য:
প্রধান অতিথি অল ইউরোপিয়ান আওয়ামিলীগের সভাপতি এম, নজরুল ইসলামের বক্তব্য: বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, সে স্বপ্নের বাস্তবায়নের কাজ যখনি শুরু করেছিলেন তখনই ঘাতকরা তাকে হত্যা করে তার স্বপ্নকে ধুলিস্যাত করতে চেয়েছিল। কিন্তু একটু দেরিতে হলেও বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ হাতে দেশ শাসনের কারনে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবে রুপান্তরিত। আজ বাংলাদেশ উন্নতির রোল মডেল। স্বাধীনতার বিপক্ষের শত্রুরা এখনো তৎপর। আমাদের ভিতর যদি একতা না থাকে তাহলে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিবে। তাই দলকে শক্তিশালী করতে একতার কোন বিকল্প নেই।

বেল্লাল আহকায়ক, লিটন সদস্য সচিব: শেষে প্রধান অতিথি ঘোষনা দেন, আপনাদের কাছে আমার একটা আবেদন হচ্ছে একটা গতিশীল কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠন করেন। আমরা এডহক কমিটি করবো। আামি এখন দুজনার নাম ঘোষনা করছি যারা ছয়জন অথবা আটজনের মত এ কমিটিতে নিয়ে ছয়মাসের ভিতর একটা গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের ব্যাবস্থা করবে। এরপরে আ’লীগ নেতা বেল্লাল হোসেনকে এডহক কমিটির আহবায়ক আর ইকবাল আহমেদ লিটনকে সদস্য সচিবের নাম ঘোষনা করেন। এতে উপস্থিত সব নেতা কর্মীরা তা মেনে নিয়ে প্রধান অতিথিকে ধন্যবাদ জানানো হয়। পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন বেল্লাল হোসেন।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বরুন দাস, তৌহিদ, অলোক সরকার, জসিম উদ্দিন, রাজীব আহমেদ, নাসির, মনিরুল ইসলাম শুভ, রিয়াজ, আব্দুল হক সাগর, সেলিম, নজরুল, ফয়জুল্লাহ সিকদার, সাঈদুর রহমান, মো: জসিম প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *