সৈয়দ জুয়েল, আয়ারল্যান্ড থেকে ॥ কিলারনির ব্রেহন হোটেলে পাসপোর্ট সার্জারীর গতকাল ছিল শেষদিন। আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশের দূতাবাস না থাকায় বছরে দু থেকে তিনবার লন্ডন থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা এখানে এসে পাসপোর্ট সার্জারীর কাজ করে থাকেন। সেবা নিয়ে সাধারন মানুষের কোন অভিযোগ নেই, তারা সন্তুষ্ট। লন্ডন থেকে তারা এসে এ সেবাটা না দিলে সাধারন মানুষের আরো ভোগান্তি বাড়তো। তবে পাসপোর্ট সার্জারীতে আসা লন্ডন দুতাবাসের কর্মকর্তারা এবং সেবা নিতে আসা প্রবাসীরা দাবী করেছেন, বিনিয়োগ বাড়াতে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপন জরুরী।
আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশীদের দীর্ঘ দিনের প্রানের দাবী আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপনের। দূতাবাস হলে যেমন বাংলাদেশ সরকার আর্থিকভাবে লাভবান হত, তেমনি এখানে বাংলাদেশীরাও তাদের পাসপোর্টের সেবাটা আরো দ্রুত পেত। অনেক বিত্তবান আছেন, যারা বাংলাদেশের সাথে ব্যাবসা করতে আগ্রহী, কিন্তু দূতাবাস না থাকায় লন্ডন হয়ে আয়ারল্যান্ডে পন্য নিয়ে আসতে হবে, এতে করে অর্থ ব্যায় অনেক বেড়ে যায়, তাই ব্যাবসায়ীরা এদিকে বিনিয়োগে ঝুঁকছেনা।
দূতাবাস স্থাপনে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কোন আলোচনা হয়েছে কি না, এ বিষয় উপস্থিত আওয়ামীলীগ নেতা বেল্লাল হোসেন জানান, এ মাসের প্রথম দিকে অল ইউরোপীয়ান আওয়ামিলীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলাম আমাদের কর্মী সমাবেশে যখন এসেছিলেন, তখন আমরা প্রধানমন্ত্রী বরাবরে একটা আবেদনপত্র দিয়েছি দূতাবাসের জন্য। এম নজরুল ইসলাম তখন বলেছেন আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস খুবই জরুরী। যত দ্রুত সম্ভব আবেদনটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করবো।
আওয়ামীলীগের আরেক নেতা কামরুজ্জামান নান্না বলেন, প্রায় তিন শতাধিক লোকের পাসপোর্টের কাজ সম্পাদন করা হয়েছে। দূতবাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন এটা খুবই জরুরী। আমরা এ বিষয় কাজ করছি। অর্থ মন্ত্রনালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রলায়ের সাথে আমরা সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখছি।
দূতাবাস সংক্রান্তে উপস্থিত অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (আবাই) এর সাবেক সাধারন সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বলেন, দূতাবাসটি হলে ওয়ার্কপার্মিটে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে অনেক কর্মী এখানে আসার সুযোগ পেত, এতে করে বেকার সমস্যারও অনেকটা দূর হত। তেমনি সরকারও লাভবান হত। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের প্রায় পনের হাজারের মত সন্তান আছেন, দূতাবাস না থাকায় তাদের বাংলাদেশী নাগরিকত্ব নেয়ার আগ্রহ কমে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য অশনি সংকেত।
পাসপোর্ট সার্জারীতে আসা মাকসুদুর রহমান বলেন- এ্যাথলোন থেকে এসেছি, সময় অর্থ দুটোরই অপচয়। আয়ারল্যান্ডে শনি ও রবিবার ছুটি ম্যানেজ করা সবার জন্যই সমস্যা হয়ে যায়। দূতাবাস হলে আমরা যেমন লাভবান হতাম, সরকারও রাজস্ব পেত। এটা খুবই জরুরী। আশা রাখি প্রধানমন্ত্রী নজর দিবেন এবং আমাদের এ সমস্যার সমাধান করবেন।
পাসপোর্ট সার্জারীতে আসা কর্মকর্তাদের ভিতর লুৎফুল হাসান (মিনিস্টার কাউন্সিলর) সুদীপ্ত আলমর(প্রথম সচিব, দুতালয় প্রধান), মোসাদ্দেক হোসেন(এ্যাটাসে কনসুলার) এ সময় উপস্থিত থেকে সেবা প্রদান করেন।