স্বেচ্ছাসেবক দলের বিরুদ্ধে বিএনপির কেন্দ্রে অভিযোগ

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট ॥ বরিশালে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্য গঠিত পুর্নাঙ্গ কমিটি নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, ১৭১ সদস্য বিশিস্ট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে পদপদবী বন্টনে অনিয়ম ও বানিজ্য করা হয়েছে। অনৈতিক সুবিধা নিয়ে কমিটিতে ঢালাওভাবে ‘নেতা’ বানানো হয়েছে। বিশেষ করে ৩৪জনকে সহ সম্পাদক আর মাত্র ৮জনকে সদস্য পদে রাখায় প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এদিকে বরিশাল দক্ষিন জেলা বিএনপি ও উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি অভিযোগ করেছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা লংঘন করে মুল দলের পরামর্শ না নিয়েই কমিটি করায় তৃনমুলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এজন্য কেন্দ্রকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৭ অক্টোবর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ১৭১ সদস্য বিশিস্ট পুর্নাঙ্গ কমিটি অনুমোদন হয়। এর আগে গত বছর আংশিক কমিটি গঠন হয়েছিল। তাতে সভাপতি করা হয় আমিনুল ইসলাম লিপন ও সাধারন সম্পাদক করা হয় রফিকুল ইসলাম জনিকে। তবে সদ্য গঠিত কমিটি নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
সদ্য গঠিত কমিটিতে সহ সাধারন সম্পাদক পদ দেয়া হয়েছে হিজলা উপজেলা ছাত্রদল নেতা আসাদুজ্জামান খান সজলকে। কিন্তু তিনি ও তার অনুসারীরা সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবী করেছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কোন পদের সাথে সজল সম্পৃক্ত নন। ছাত্রদল নেতা আসাদুজ্জামান খান সজল বলেন, ‘আমি সেচ্ছাসেবকদলের সহ সম্পাদক কেন হব। ফেসবুকের মাধ্যমেও বলেছি এ কমিটির সাথে আমি নেই। কারন কমিটি নিয়ে বিতর্ক আছে। কমিটিতে ৩৪জনকে সহ সম্পাদক করা হয়েছে যা নজিরবিহনীন। কমিটি অনুমোদেনর পূর্বে উত্তর বিএনপি ও দক্ষিন বিএনপির সাথে আলোচনা না করায় নেতৃবৃন্দ বিষয়টি কেন্দ্রীয় বিএনপিকে জানিয়েছেন।’
এদিকে নতুন কমিটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে। বিএনপি অনুসারী তানভির আহমেদ গত ৭ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, ‘সদ্য ঘোষিত বরিশাল জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের কমিটিতে সহ সাধারন সম্পাদক ৩৪জন। লোক না থাকায় সদস্য মাত্র ৮জন। সবাই নেতা।’ সরদার জুয়েল নামে অপর একজন বলেন, ‘বড় একটি রেস্টুরেন্টে বসে যদি কমিটির তালিকা করা হয় তাহলে এমন অবস্থায়ই হয়।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেচ্ছাসেবকদলের এক নেতা জানান, পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাসেবকদলের শীর্ষ কয়েক নেতা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে উপজেলার নেতাদের মধ্যে পদ বানিজ্য করেছেন। যেকারনে এ কমিটিতে নেতার সংখ্যাই বেশি।
এদিকে বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মেজবা উদ্দিন ফরহাদ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা রয়েছে অঙ্গ সংগঠনের কমিটি করতে হলে মুল দলের পরামর্শ নিতে হবে। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি গঠনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ লংঘন করা হয়েছে। যেকারনে নেতাকর্মীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তিনি দলের যুগ্ন মহাসচিব রেজভী আহমেদকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। দক্ষিন জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চাঁন বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সাম্প্রতিক চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে যে জেলার অঙ্গসংগঠনের কমিটি হতে হলে মুল দলের(বিএনপির) সাথে আলোচনা করতে হবে। তারা এটি করেনি। এর অর্থ এরপর যখন উপজেলা কমিটি করা হবে তখনও বিএনপিকে জানাবে না। এঅবস্থায় কেন্দ্র বিষয়টি জেনেছে।
এব্যপারে বরিশাল জেলা সেচ্ছাসেবকদলের সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জনি বলেন, কমিটি গঠনে মুল দলের পরামর্শ নিতে হবে দলে এমন একটি নির্দেশনা আছে। এক্ষেত্রে কমিটি গঠনে উত্তর ও দক্ষিন জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। কিন্তু তারা বিষয়টি জানেন। উত্তর জেলার সভাপতি কয়েকজনের নামও প্রস্তাব করেছেন। দক্ষিনের সভাপতি এ বিষয়ে আগ্রহ দেখাননি। সহ সম্পাদক সজলের পদ নিয়ে আপত্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার পদ নিচের সারিতে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ। তবে গুরুত্বপূর্ন পদগুলোতে নগরীর নেতাদেরই রাখা হয়েছে। জেলা সেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি আমিনুল ইসলাম লিপনকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *