যেভাবে বাগদাদির সন্ধান পায় সিআইএ

Spread the love

আইএস প্রধান আবু বকর বাগদাদির গোপন অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেয় তারই এক শীর্ষ সহযোগী।

এত বছর ধরে কীভাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন বাগদাদি, তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রয়টার্স।

রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ঘোষণায় বাগদাদির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শনিবার রাতে সিরিয়ার ইদলিবে মার্কিন অভিযানে বদ্ধ সুড়ঙ্গের মধ্যে আত্মঘাতী হয়ে তিন সন্তানসহ নিজেকে উড়িয়ে দেন আইএস নেতা।

সোমবার ইরাকের দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, বাগদাদি কীভাবে এত বছর ধরে পালিয়ে বেড়িয়েছেন, সেই বিষয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয় তারই এক শীর্ষ সহযোগী ইসমায়েল ইথাবি।

তার কাছ থেকে ইরাকি গোয়েন্দারা প্রথম একটি সূত্রের সন্ধান পান। তুরস্ক কর্তৃপক্ষ ইথাবিকে গ্রেপ্তারের পর ইরাকের কাছে তুলে দিয়েছিল।

ইসলামিক সায়েন্সে পিএইচডিধারী ইথাবিকে আইএস নেতার শীর্ষ পাঁচজন সহযোগীর একজন মনে করে থাকে ইরাকি গোয়েন্দারা।

ইথাবি ইরাকি কর্মকর্তাদের জানান, নিজেকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে রাখতে অনেক সময় শাকসবজি ভরা চলন্ত মিনিবাসে বসে কমান্ডারদের সঙ্গে কৌশল নিয়ে আলোচনায় বসতেন বাগদাদি।

চলাফেরা ও লুকিয়ে থাকার জন্য বাগদাদি যেসব জায়গা ব্যবহার করতেন সে সম্পর্কে ইথাবি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। সেসব তথ্যই তাকে খুঁজে বের করতে ধাঁধার সমাধান পেতে সাহায্য করে ইরাকের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ টিমকে।

বাগদাদিসহ তার পাঁচ সহযোগীর বিস্তারিত তথ্য জানায় ইথাবি। এরা সবাই বাগদাদির সঙ্গে সিরিয়া ও বিভিন্ন স্থানে বৈঠক করেছিল।

ইথাবিকে ধর্মীয় নির্দেশনা ও আইএসের কমান্ডার বেছে নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেন বাগদাদি।

২০১৭ সালে আইএস নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা হারাতে বসলে সিরীয় স্ত্রীকে নিয়ে ইরাক থেকে সিরিয়ায় পালিয়ে যান ইথাবি।

ইরাকি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, এই বছরের শুরুতে মার্কিন, তুর্কি ও ইরাকি গোয়েন্দাদের যৌথ অভিযানে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ আইএস নেতা ধরা পরে। তাদের কাছ থেকে বাগদাদি সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য পাওয়া যায়।

সিরিয়ার কোথায় কোথায় তারা বাগদাদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন সবগুলোর তথ্য ইরাকি গোয়েন্দাদের জানায় তারা। ওই এলাকাগুলোর ভেতরে আরও সূত্র মোতায়েনের জন্য সিআইএ-র সঙ্গে সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত নেয় ইরাকি গোয়েন্দারা।

একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ‘২০১৯ সালের মাঝামাঝি আমরা ইদলিবকে শনাক্ত করি যেখানে বাগদাদি তার পরিবার ও তিন ঘনিষ্ঠ সহযোগীসহ প্রায়সই এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে চলে যাচ্ছিলেন।‘

সেই সময় সিরিয়ায় থাকা গোয়েন্দারা ইদলিবের বাজারে চেক স্কার্ফে মাথা ঢাকা এক ইরাকিকে দেখতে পায়। একটি ছবির সঙ্গে মিলিয়ে তাকে শনাক্ত করা যায় যে, এই ব্যক্তিটি ইথাবি ছিলেন। ইথাবিকে অনুসরণ করে গোয়েন্দারা বাগদাদি যে বাড়িতে অবস্থান করছিল তার খোঁজ পায়।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সব তথ্য আমরা সিআইএকে দেই। তারা স্যাটেলাইট ও ড্রোন ব্যবহার করে পাঁচ মাস ধরে ওই এলাকার ওপর নজরদারি চালায়। তবে দুইদিন আগে একটি মিনিবাসে চড়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাগদাদি ওই এলাকা ছেড়ে নিকটবর্তী একটি গ্রামে চলে যান।’

শনিবার রাতে সেই গ্রামে মার্কিন কমান্ডো বাহিনী অভিযান চালায়। সেখানে কোণঠাসা হয়ে একপর্যায়ে তিন সন্তানসহ আত্মঘাতী হন আইএস প্রধান বাগদাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.