গার্মেন্টস কারখানায় নামাজ বাধ্যতামূলক

Spread the love

বাংলাদেশে একটি পোশাক কারখানায় সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য অফিস চলাকালীন প্রতিদিন মসজিদে গিয়ে যোহর, আসর ও মাগরিবের নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এই মাসের ৯ তারিখে জারি করা একটি নোটিশে লেখা রয়েছে, এই তিন ওয়াক্ত নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পাঞ্চ মেশিনে পাঞ্চ করতে হবে। তাতে আরও লেখা রয়েছে, ‘যদি কোন স্টাফ মাসে সাত ওয়াক্ত পাঞ্চ করে নামাজ না পড়েন তবে সেক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তির বেতন হতে একদিনের সমপরিমাণ হাজিরা কর্তন করা হইবে।’ ঢাকার কাছে গাজীপুরে অবস্থিত মাল্টিফ্যাবস লিমিটেড নামের এই ফ্যাক্টরিতে এমন নোটিশ জারি করা হয়েছে।
ফ্যাক্টরিটির অপারেশন্স বিষয়ক পরিচালক মেসবাহ ফারুকী জানিয়েছেন, এটি শুধু উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য।
কেন এই নির্দেশ- এই প্রশ্নে মি. ফারুকী বিবিসিকে বলেন, ‘সবাই আমরা নামাজ পড়ি। আমরা ইসলাম ধর্মের অনুসারী, আমাদের নামাজ পড়া ফরজ। এখানে মুসলমান যারা আছে তারা সবাই নামাজ পড়ে। কিন্তু তারা নামাজ পড়ে বিক্ষিপ্তভাবে।’ তাছাড়া, তিনি আরও বলছেন, কর্মীদের মধ্যে মতভেদ-দূরত্ব কমানোর একটি উপায় হিসাবে কারখানায় নামাজ বাধ্যতামূলক করার এই সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন।
‘আমাদের এখানে বিভিন্ন মতভেদের লোক আছে। এখানে একটা টিম হিসেবে কাজ করতে হয়। এখানে ফেব্রিক ডিপার্টমেন্টের সাথে নিটিং সেক্টরের হয়ত একটা সমস্যা থাকে। একেকজন একেকজনের উপর দোষারোপ সারাদিন চলতেই থাকে। তো আমি এটার সমাধান হিসেবে চিন্তা করলাম তাদের যদি একসাথে বসানো যায়, একসাথে কিছু সময় যদি তারা কাটায়, তাদের মধ্যে দূরত্বটা কমবে।’
রপ্তানির জন্য সরকারের দেয়া জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কোম্পানিটির ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী জাপান, রাশিয়া ও আমেরিকা অঞ্চলের বেশ কিছু দেশে তাদের ব্যবসা। ২০১৬ সালে তাদের রপ্তানি আয় ছিল ৯০ মিলিয়ন ডলার। মেসবাহ ফারুকী বলছেন, বিষয়টি তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার, তারা অন্য কোন ধর্মাবলম্বীকে নামাজ পড়তে বাধ্য করছেন না।
তবে এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এ ধরণের নির্দেশনাকে বাংলাদেশের সংবিধান বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের আইন কেন সংবিধানেই তো বলা আছে ধর্ম কারো উপর চাপিয়ে দেয়া যাবে না। কোন আইন দিয়েই এটা বাধ্যবাধকতা দেয়া যায় না। ইসলাম ধর্মও বলে না কারো উপরে ধর্ম চাপিয়ে দেয়া যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *