সুব্রত-মন্টু-সাইয়িদ বাদ, গণফোরামের নতুন কমিটি করলেন ড. কামাল

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার ও কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তির পর ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি ও ড. রেজা কিবরিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭২ জনের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছে গণফোরাম। তবে নতুন এই আহ্বায়ক কমিটিতে রাখা হয়নি দলটির সাবেক নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ অন্তত হাফ ডজন সিনিয়র নেতাকে। গত ৭ মার্চ কামাল হোসেনকে না জানিয়ে সভা করার কারণে তাদেরকে দলীয়ভাবে ‘বিতর্কিত’ বলছেন বর্তমান নেতারা।

বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) ড. কামাল হোসেন ও রেজা কিবরিয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাইরে আরও ৭০ জনকে সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের মধ্যে প্রথমেই রয়েছে সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের নাম। এর বাইরে আ ও ম শফিকউল্লাহ, অ্যাডভোকেট আবদুল আজিজ, অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, অ্যাডভোকেট এএইচএম খালেকুজ্জামান, অ্যাডভোকেট শান্তিপদ ঘোষ, অ্যাডভোকেট জানে আলম, মেজবাহউদ্দিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট সগির আনোয়ার, অ্যাডভোকেট সুরাইয়া বেগম, অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর ও মোশতাক আহমেদসহ অন্যদের নাম রয়েছে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গণফোরামে যোগ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া। ওই সময় দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মোস্তফা মহসিন মন্টু।

আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে ১৯৯৩ সালে কামাল হোসেন যখন গণফোরাম গড়ে তোলেন তখন তার সঙ্গেই ছিলেন যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসিন মন্টু। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তার আগের বছরই মন্টুকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ওই সময় কামাল হোসেনও আওয়ামী লীগ নেতাদের খুব একটা আস্থায় ছিলেন না। ২০০৯ সালে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক হন মোস্তফা মহসিন মন্টু।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর গত বছর এপ্রিলে গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলে মোস্তফা মহসিন মন্টুর জায়গায় সাধারণ সম্পাদক করা হয় রেজা কিবরিয়াকে। ওই কমিটিতে নির্বাহী সদস্যের পদ পাওয়া মন্টুকে এবার কমিটিতেই রাখা হয়নি।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গণফোরামে যোগ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের ১৯৯৬ সালের সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদ। এরপর গত বছর গণফোরামের ওই বিশেষ কাউন্সিলের দলের ১ নম্বর কার্যনির্বাহী সভাপতির পদ পান তিনি। তাকেও আর নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে ঠাঁই দেননি কামাল হোসেন।

গণফোরামের সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক বলেন, কমিটির তালিকা দেখলে বোঝা যাবে যারা গণফোরামের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও সুস্থ ধারার রাজনৈতিক চর্চা করে আসছিলেন এবং সংগঠনের ভালোর জন্য উচিত কথা বলতেন তাদের এই কমিটিতে রাখা হয়নি। এটা এক ব্যক্তির মনোচিন্তার একটি কমিটি বলে আমি মনে করি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, কমিটিতে এমন অনেককে আনা হয়েছে যারা দীর্ঘ সময় ধরে এই দলে সক্রিয় ছিলেন না। আর সক্রিয় নেতাদের অনেককে বাদ দেওয়া হয়েছে।

মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, এই ২৬ বছরে কখনো এ রকম কোনো সমস্যা হয়নি। আমি চাই না গণফোরাম নামে একাধিক দল গড়ে উঠুক। দলের জন্য খারাপ এবং যা হচ্ছে তা কামাল হোসেনের জন্যও খারাপ।’ পরবর্তীতে কী হবে সেটা জানতে চাইলে বলেন, দলের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের ওপর নির্ভর করছে। আমি এখনো কামনা করি যে ওনাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং সবাইকে নিয়ে বসবে এবং আলোচনা করবেন। সবাইকে নিয়ে চলুক।

নতুন আহ্বায়ক কমিটির বিষয়ে সুব্রত চৌধুরী কোনো মন্তব্য করতে চাননি। আর আবু সাইয়িদ বলেন, তিনি তালিকা না দেখে কিছু বলবেন না।

জানতে চাইলে রেজা কিবরিয়া বলেন, যারা দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে এবং সহযোগিতা করেনি তাদের রাখা হয়নি। যাদের নাম তালিকায় আছে তারাই পরবর্তী কাউন্সিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।

তিনি আরও বলেন, পূর্বে যারা ছিলেন তারা অনেক জায়গাতে কমিটি করেনি এবং নতুন করে কমিটি করতে গেলে তাকে বাধাও দেওয়া হয়েছে। কামাল হোসেনের চেম্বারে বসে রাজনীতির সময় শেষ। এখন এলাকায় গিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করা হবে। আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে দলের কাউন্সিল করবো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *