মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক উচ্ছেদ হয়ে রোহিঙ্গারা উচ্ছেদ হয়ে বাংলাদেশে আসে ২০১৭ সালে। তবে তার আগেই ২০১৩ সালে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি বলেছিলেন অং সান সু চি।
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে ২০১৩ সালের এক বৈঠকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাংলাদেশি বলেন সু চি।
২০১০ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের নানা ঘটনা নিয়ে ‘ফর দ্য রেকর্ড’ নামে একটি বই লেখেন ক্যামেরন।
বৃহস্পতিবার বইটি প্রকাশ পায়।
পরদিন যুক্তরাষ্ট্রের সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন নিউজউইকে ক্যামেরনের বই নিয়ে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। যেখানে সুচির সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বইতে ক্যামেরনের বক্তব্য উঠে আসে।
২০১৩ সালের অক্টোবরে লন্ডন সফরে যান সু চি। সেখানে ক্যামেরনের সঙ্গে দেখা হয় তার।
সে বৈঠক নিয়ে ক্যামেরন লেখেন, “২০১৩ সালের অক্টোবরে তিনি লন্ডন সফরে আসেন। তখন সেখানে সবার মনযোগ ছিল তার দেশের রোহিঙ্গা মুসলমানদের অবস্থা নিয়ে, যাদের বৌদ্ধ রাখাইনরা বাড়ি ছাড়া করছে। সেখানে ধর্ষণ, হত্যা ও জাতিগত নিধনের খবর পাওয়া যাচ্ছিল। পুরো বিশ্ব তা দেখছিল, আমি তাকে ওই বিষয়ে বললে উত্তরে তিনি বলেন, ‘তারা আসল বার্মিজ নন, তারা বাংলাদেশি’।”
২০১৭ সালের অগাস্টে রাখাইন রাজ্যে কয়েকটি পুলিশ পোস্টে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় নয় পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর ওই রাজ্যে বিশেষ করে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে সেনা অভিযান শুরু হয়।
হত্যা, ধর্ষণ এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়াসহ নানা নিপীড়ন থেকে প্রাণ বাঁচাতে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা এখনো সেখানে রয়ে গেছে।
সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে ওই সেনা অভিযানকে ‘জতিগত নিধন’ বলে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ।
যদিও রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিপীড়নের শিকার হওয়ার ইতিহাস আরো পুরানো।
২০১৩ সালে সেখানে বৌদ্ধ রাখাইন ও রোহিঙ্গা মুসলমানদের মধ্যে ভয়াবহ দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে।
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও নিপীড়ন নিয়ে প্রতিবাদ না করায় তখনই আন্তর্জাতিক মহলে দারুণ সমালোচিত হয়েছিলেন ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী সু চি।
এ বিষয়ে ২০১৩ সালে লন্ডন সফরের সময় বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সু চি বলেছিলেন, শুধু মুসলমানরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে এমনটা নয়, বৌদ্ধরাও নৃশংসতার শিকার হচ্ছে।