খাবার নাই, ওষুধ নাই, বাঁচার আকুতি কাঙ্গালী সুফিয়ার

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : ফোন করে পরিচয় দিতেই কেঁদে ফেললেন প্রখ্যাত বাউলশিল্পী কাঙ্গালিনী সুফিয়া। নিজের বর্তমান দৈন্যদশার কথা জানিয়ে তিনি বললেন, ‘কতটা অভাবে দিনযাপন করছেন সেটা বলে বোঝানো যাবে না। একমাস আগে কুষ্টিয়ার ডিসি অফিস থেকে দশ কেজি চাল ও এক কেজি আলু পেয়েছিলাম। সেটাও ফুরিয়ে গেছে। এক মাস ধরে ওষুধ কেনার টাকাও নেই। কেউ খোঁজও নেয় না।’

সুফিয়া কান্না জড়ানো কণ্ঠে বললেন, ‘আমাকে বাঁচান ভাই। আমার ওষুধ কেনার ব্যবস্থা করে দেন।’

মাসখানেক আগে কুষ্টিয়া যান কাঙ্গালিনী সুফিয়া; লালন সাঁইজীর আখড়ায় গান গাইতে। সেখানে গিয়েই আটকা পড়েন । ঢাকায় আর ফেরা হয়নি তার।

যার গানের সুনাম দেশ ছাড়িয়ে ভিনদেশেও। সুরের মূর্ছনায় ভাসিয়ে জয় করে নিয়েছেন কোটি ভক্তের হৃদয়। জনপ্রিয় এ বাউল শিল্পী বয়সের ভারে এখন অনেকটাই ন্যুব্জ। তারপরও এই শিল্পী এখনো বেশ হাসিখুশি। তার ব্যবহার এখনও শিশুসুলভ।

করোনাভাইরাসের কারণে ভালো নেই এই সঙ্গীতশিল্পী। টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে চলছে তার সংসার। এখন পর্যন্ত কেউই তার পাশে দাঁড়ায়নি। শিল্পী হিসেবে তেমন কোন সহায়তাও পাননি। সুফিয়া বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে কোথাও যেতে পারি না। গান-বাজনা নাই। ঘরে বসে আছি। কী করবো? এখন তো না খাইয়া মরার মতো অবস্থা।’

কাঙ্গালিনী সুফিয়া দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। ওষুধের ব্যয়ও অনেক। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে কয়েক মাস ধরে সেই ওষুধ খাওয়াও বন্ধ। হার্ট, কিডনি ও ব্লাড প্রেশারের ওষুধ এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে বলে জানালেন তিনি।

আক্ষেপ নিয়ে গানের এ কাঙ্গাল জানালেন, ‘ক’দিন আর বাঁচবো?’ বয়সের ভারে নুয়ে পড়া কাঙ্গালিনী কোনরকমে গান গাইতে পারেন। তবে এক সঙ্গে দুই-তিনটার বেশি গান গাইতে পারেন না। শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যান। দম আটকে আসে।

বর্তমানে কুষ্টিয়া থাকা কাঙালিনী সুফিয়ার তিনজনের সংসার। ঢাকায় নাতি, মেয়ের জামাই আছে। করোনাভাইরাসের এই পরিস্থিতিতে সরকারের কাছেও সাহায্যের আবেদন জানান তিনি। বলেন, ‘খাবার টাকা না দিলেও আমাকে ওষুধের টাকা হলেও কিছু দিতে বলেন সরকারকে। রোগ বেড়ে যাচ্ছে। একমাস হয় ওষুধ কিনতে পারছি না। আশা করবো, আগের মতো এখনও সরকার আমার পাশে দাঁড়াবেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *