ঘূর্ণিঝড় আসছে, নিতে হবে যেসব প্রস্তুতি

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট: অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ বুধবার বিকেল বা সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উপকূলীয় এলাকায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় প্রয়োজন সচেতনতা এবং পূর্ব প্রস্তুতি। আতঙ্কিত না হয়ে ঘূর্ণিঝড়ের আগে-পরে এবং ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় কিছু কাজ করা এবং কিছু বর্জন করা উচিত।
ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগে করণীয়:
১. ইন্টারনেটে পোস্ট দেখে আতঙ্কিত না হওয়া:
যেকোনো পেজে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে পোস্ট দেখে আতঙ্কিত না হয়ে টেলিভিশন অথবা এফএম রেডিওতে খবর শুনুন। রেডিও এবং টেলিভিশনে ভেরিফায়েড নিউজ পাবেন। বিপদে শান্ত থেকে সমাধানের চেষ্টা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
২. চার্জ দেওয়া:
পাওয়ার ব্যাংক, চার্জার লাইট, টর্চ লাইটে চার্জ ফুল রাখুন। এর আগে ঘূর্ণিঝড় আইলার জন্য ১ দিনের বেশি বিদ্যুৎ, গ্যাস, মোবাইল ফোনের সার্ভিস পাওয়া যায়নি। শহরে আছি বলে কিছু হবে না, এমন মনে করা বোকামি। ব্যাকআপ হিসেবে মোমবাতি এবং লাইটার রাখা ভালো। তবে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আগুন সব সময়ই লাস্ট অপশন।
৩. ফার্স্ট এইড বক্স:
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় পানিবাহিত রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে। ডায়রিয়া, জ্বরের জন্য স্যালাইন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সংগ্রহে রাখুন।
৪. গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংরক্ষণ:
বাসা টিনশেড হলে বা নিচ তলায় হলে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস ওয়াটারপ্রæফ বক্সে টেপ এবং পলিথিন পেঁচিয়ে রাখুন। ফ্লোরে মাল্টিপ্লাগ রাখবেন না।
৫. শুকনো খাবার:
নিরাপত্তার জন্য গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, টেলিফোন লাইন বন্ধ থাকতে পারে। রাস্তা বন্ধ থাকতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার সংগ্রহে রাখুন।
৬. ফুলের টব, নির্মাণ সামগ্রী নিরাপদ স্থানে রাখুন:
ফুলের টব নিরাপদ স্থানে রাখুন। খোলা জায়গায় নির্মাণ সামগ্রী রাখবেন না। বাসার পাশে নির্মাণাধীন ভবন থাকলে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন।

ঘূর্ণিঝড় শুরু হলে করণীয়:
১. রাস্তায় থাকলে শপিং মল, মসজিদ, স্কুল বা যেকোনো পাকা ইমারতে আশ্রয় নিন। কোনোভাবেই খোলা আকাশের নিচে থাকা যাবে না।
২. রাস্তায় যানজটে পড়লে গাড়ির পাশে জায়গা রেখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন যেন বিপদের মুহূর্তে দরজা খোলা যায়।
৩. বাড়ির বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের মেইন লাইন বন্ধ করে দিন।
৪. দরজা-জানালা বন্ধ রাখুন যাতে বাইরে থেকে ময়লা বা ভারী কিছু উড়ে এসে আঘাত করতে না পারে।
৫. টিনশেড বাসা হলে বা নিচু জায়গায় হলে নিরাপদ কোথাও আশ্রয় নিন।
৬. ইন্টারনেট ব্যবহার না করে ফোনে রেডিও শুনতে হবে। ডাটা কানেকশন অন রেখে ফেসবুক স্ক্রল করলে ব্যাটারিও দ্রæত শেষ হবে, নেটওয়ার্কও বেশি ব্যস্ত থাকবে।
৭. কোনোভাবেই ট্যাপের পানি সরাসরি খাওয়া যাবে না। ফুটিয়ে বা ভালো ফিল্টার ব্যবহার করতে হবে।
৮. খুব বেশি জরুরি না হলে রাস্তায় বের হওয়া নিরাপদ নয়।
৯. কল করে নেটওয়ার্ক বিজি না রেখে এসএমএস ব্যবহার করে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করুন। ডাটা কানেকশন অফ রাখুন।
ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পরে করণীয়:
১. ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িতে প্রবেশ করবেন না।
২. যত দ্রæত সম্ভব সুরক্ষিত স্থানে চলে যান।
৩. ছিঁড়ে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারে হাত দেবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *