বরিশালের ৭ সরকারী কলেজ অধ্যক্ষ নেই, কার্যক্রম স্থবির

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট: ঐতিহ্যবাহী বরিশাল সরকারী বিএম কলেজ সহ বিভাগের ৭টি নামীধামী কলেজ দীর্ঘদিন ধরে অভিভাবক শুন্য হয়ে পড়েছে। অধ্যক্ষ না থাকায় ভারপ্রাপ্ত দিয়ে জোড়াতালিভাবে চলছে উচ্চ শিক্ষার এই বিদ্যাপিঠগুলো। ফলে কলেজগুলোর শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। সংশ্লিস্টরা জানিয়েছেন, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্রæত অধ্যক্ষ পদ পূরনে অনলাইনে আবেদন চেয়েছে শিক্ষামন্ত্রনালয়।
জানা গেছে, গত ৩০ মে বরিশাল সরকারী বিএম কলেজের অধ্যক্ষ অবসরে যান। এর পর থেকে দেড় মাস পর্যন্ত সেখানকার দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে পালন করছেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড: মো: গোলাম কিবিরয়া। এ পদে দায়িত্ব পেতে হাফ ডজন শিক্ষক জোর তদবিরও চালাচ্ছেন। শিক্ষকরা দাবী করেছেন, অধ্যক্ষ না থাকার কারনে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে নীতি নির্ধারনী সিদ্ধান্ত নেয়া অনেকাংশেই সম্ভব হয় না। কলেজের উন্নয়ন, একাডেমিক সিদ্ধান্ত, প্রশাসনিক কার্যক্রমেও জটিলতা দেখা দিয়ে থাকে। বিসিএস সাধারন শিক্ষা সমিতি বরিশাল জেলা সাধারন সম্পাদক ও বিএম কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আক্তারুজ্জামান খান বলেন, বিএম কলেজ সহ গুরুত্বপূর্ন সরকারী কলেজে অধ্যক্ষ নেই দীর্ঘদিন। এতে একাডেমিক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অধ্যক্ষ না থাকায় নতুন পদ্ধতিতে বিশেষ করে অনলাইনে ক্লাস গ্রহনের প্রনোদনা ও পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছেন না শিক্ষকরা। এর ফলে অনলাইন ক্লাসও ব্যাহত হচ্ছে। প্রশাসনিক কার্যক্রমও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। থমকে গেছে উন্নয়ন।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল বিএম কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড: মো: গোলাম কিবিরয়া বলেন, কেবল বিএম কলেজ নয়, সব কলেজেই পূর্নাঙ্গ অধ্যক্ষ দরকার। শিক্ষামন্ত্রনালয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে। ইতোমধ্যে ইচ্ছুকদের আবেদনও চেয়েছে।
জানা গেছে, একইভাবে সরকারী বরিশাল কলেজে গত ৩০ মার্চ অধ্যক্ষ পদ শুন্য হয়। সেখানেও ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলছে কার্যক্রম। আলেকান্দা সরকারী কলেজে অধ্যক্ষ পদ শুন্য গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে। বরিশালের বানারীপাড়ার চাখার সরকারী কলেজেও অধ্যক্ষ নেই দীর্ঘদিন ধরে। পটুয়াখালী সরকারী কলেজে গত ৩০ মার্চ, ঝালকাঠী সরকারী মহিলা কলেজে ১৮ মে এবং ভান্ডারিয়া সরকারী কলেজে দীর্ঘদিন অধ্যক্ষ পদ শুন্য রয়েছে বলে জানা গেছে।

বিসিএস সাধারন শিক্ষা সমিতির বরিশাল আঞ্চলের যুগ্ন মহাসচিব অধ্যক্ষ প্রফেসর সরদার আকবর আলী বলেন, বিভাগের ৭টি গুরুত্বপূর্ন কলেজে অধ্যক্ষ না থাকায় ওই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষা ও প্রশাসনিক দিক থেকে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানে স্থবিরত বিরাজ করছে। নামাদামী এসব কলেজে অধ্যক্ষ পদ শুন্য থাকায় স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষামন্ত্রনালয় অধ্যক্ষ হতে ইচ্ছুকদের আবেদন চেয়েছেন। এক্ষেত্রে নীতিমালাও জারি করা হয়েছে। তবে পদগুলো দ্রæত পূরন করার দাবী করেছেন শিক্ষকরা।

এব্যপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) বরিশাল অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, রোববার বিভাগের সকল কলেজ অধ্যক্ষদের নিয়ে ভার্চুয়াল অনলাইন সভা হয়েছে। তাতে মাউশি এর মহাপরিচালকও সংযুক্ত হন। ওই সভায় অনলাইন ক্লাসের জটিলতা, অধ্যক্ষ-শিক্ষক সংকটের নানা সমস্যা উঠে এসেছে। এ নিয়ে মহাপরিচালকের কাছে একটি প্রতিবেদন অচিরেই পাঠানো হবে। তাছাড়া অধ্যক্ষ পদে আগ্রহীদের আবেদন চেয়ে চলতি মাসে শিক্ষা মন্ত্রনালয় অনলাইনে আবেদন চেয়েছেন। আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে আবেদন করা যাবে। আবেদন শেষে সাক্ষাতকারের পর অধ্যক্ষ পদায়ন হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *