সৈয়দ জুয়েল: পুলিশ, সাংবাদিক, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। কিছু কিছু অভিযোগের যে সত্যতা নেই তা-ও নয়। টাকা খেয়ে পুলিশ আাসামী ছেরে দেয়া, রাঘব বোয়ালদের অপকর্মের খবর প্রকাশ না করে কতিপয় সাংবাদিকদের সুবিধা নেয়া,সরকারি চিকিৎসকরা সাধারন নাগরিকদের চিকিৎসা সেবা না দিয়ে সরকারি হাসপাতালে বেতন ও পেনশন রক্ষার্থে মাঝে মাঝে হাজিরা দেয়া সহ চিকিৎসা সেবায় অবহেলা, এসব অভিযোগ নিত্যদিনের।
আমাদের দেশে তো আরো অনেক পেশা রয়েছে যাতে দূর্নীতি,অনিয়ম এ তিনটি পেশার চেয়ে অনেক বেশি হয়ে থাকে। তাহলে কথা হলো- কেন হরহামেশাই এদের নিয়ে কথা হয়! বিখ্যাত দার্শনিকদের বানী- কাজ যারা করেন,তাদের নিয়েই কথা হয় বেশি। বিশ্বজুড়ে করোনার মহামারিতে ভীত হয়ে অধিকাংশ মানুষই যখন নিরাপদে ঘরের খিড়কি লাগিয়ে বেঁচে থাকার আশা বাঁচিয়ে রাখছেন,তখন পৃথিবীর প্রতিটি দেশের সাংবাদিকরা করোনার ভয়কে দূরে রেখে হাসপাতাল থেকে,রাস্তায় থেকে খবর পৌছে দিচ্ছেন প্রতিটি ঘরে।
করোনায় আইন মেনে চলার কাজে জনসচেতনতা ও মৃত্যু ব্যাক্তিকে দাফনের কাজও করছেন পুলিশ। চিকিৎসকরা হাসপাতাল থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে সেবা দিচ্ছেন সাধ্যমত। এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগলে পুলিশই শেষ ভরসাস্থল,আমরা তাদের কাছেই ছুটে যাই। নীতি নির্ধারকদের কানে পৌছতে,যে কোন প্রচারনায় সাংবাদিকদেরই দ্বারস্থ হই। অসুস্থ হলে চিকিৎসকরাই আমাদের শেষ ভরসা। ফেসবুকে স্ট্যাটাস অথবা মুখে খিস্তি খেউর যতটা সহজ- বাস্তবে কাজ করা অনেক বেশি কঠিন। এ সহজ কথা যত দ্রুত সাধারন নাগরিক বুঝবে,তত দ্রুত জাতি এগিয়ে যাবে।
আমাদের সাধ অনেক,কিন্তু সাধ্যের সীমাবদ্ধতা আছে। চাওয়া ও পাওয়ার মাঝে ফারাক ঘটায় সীমাবদ্ধতা। সচেতন নাগরিক ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের নাগরিকরাই রাস্ট্রের সেরা নাগরিক। যে দেশে এ দু শ্রেনীর নাগরিকের সংখ্যা বেশি,সে দেশগুলিই সুখী ও নিরাপদ। পক্ষান্তরে যে সকল দেশগুলোতে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের অভাব ও অসচেতন নাগরিকের সংখ্যা বেশি- উন্নত রাস্ট্র থেকে অনেকটাই পিছিয়ে তারা৷ উন্নত রাস্ট্র গঠনে উন্নত মনের বিকল্প নেই।বর্তমান মহামারিতে বেঁচে থাকাই ভাগ্যের। জীবন- মরনের সন্ধিক্ষনে আমরা সবাই।
এই সময়ে একে অপরের প্রতি সাহায্য ভালবাসা, শ্রদ্ধাবোধ অপরিহার্য হয়ে পরেছে। আজ এই দূর্যোগে যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন,তাদের সহযোগিতা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাদেরকে একটু সন্মান জানালে কাজের প্রতি তাদের দায়িত্ববোধ আরো বেড়ে যাবে,যার সুফল পাবে রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক। তাই এই ক্রান্তিলগ্নে সমালোচনা নয় সহযোগিতাই যেন হয় আমাদের প্রধান ব্রত।