নাগরিক রিপোর্ট: বরিশালে সংক্ষিপ্ত পরিসরে অনুষ্ঠিত হয়েছে ভারত উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ দিপাবলী উৎসব। অন্যান্য বছর ব্যাপক সমারোহে দিপাবলী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও করোনার কারণে এবার সবকিছু করা হয় সংক্ষিপ্ত পরিসরে। দিপাবলী উৎসবের জন্য মহাশ্মশানের মঠ সহ সমাধীস্থলগুলো সাঁজানো হয়েছে নতুনরূপে। উৎসবে প্রয়াতদের সমাধীর কাছে প্রার্থনাসহ তাদের পছন্দের খাবার সাঁজিয়ে প্রার্থনা করেন তাদের স্বজনরা। প্রয়াতদের স্মরন করে সমাধিস্থলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অনেক স্বজন।
করোনার কারণে এবার তোরন নির্মাণ, আলোকসজ্জা এবং মেলার আয়োজন করেনি কর্তৃপক্ষ। সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে দিপাবলী উৎসব সম্পন্ন করার জন্য নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে মহাশ্মশান রক্ষা কমিটি। তবে এসব বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে শুক্রবার সন্ধ্রায় ভক্তদের ভীর দেখা গেছে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার মো. খাইরুল ইসলাম শুক্রবার দুপুরে মহাশ্মসান পরিদর্শন করেন।
প্রতি বছর কালি পূঁজার আগের দিন ভূত চর্তুদশীর পূণ্য তিথিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তাদের প্রয়াত স্বজনদের সমাধিতে দীপ জ্বেলে, চন্ডি পাঠ করে এবং তাদের পছন্দের খাবার প্রদর্শন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রয়াত স্বজনদের উদ্দেশ্যে প্রার্থনার অনুষ্ঠান পরিনত হয় উৎসবে। প্রতিবছর এই দিনটির অপেক্ষায় থাকেন প্রয়াতদের স্বজনরা। দেশ-বিদেশ থেকে হাজারো পুর্নার্থী আসেন মহাশ্মশানে। শুক্রবার সকাল ১০টার পর থেকে লগ্ন অনুযায়ী শুরু হয় দিপাবলীর আনুষ্ঠানিকতা। চলবে আজ শনিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত।
নগরীর কাউনিয়ায় প্রায় ৬ একর জমির উপর গড়ে ওঠা মহাশ্মশানে প্রায় ৬১ হাজার সমাধী রয়েছে। ভারত উপমহাদেশে এত বড় সমাধীস্থল আর নেই। বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুর্খার্জী বলেন, করোনার প্রকোপ ঠেকাতে এবার সংক্ষিপ্ত পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে শ্মশান দিপাবলীর। নির্মান করা হয়নি তোরন। করা হয়নি আলোকসজ্জা। মেলাও আয়োজন করা হয়নি। এবার মাস্ক ব্যতিত কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। জীবানুনাশক দুটি টানেল বসানো হয় শ্মশানে প্রবেশ গেটে।
সামাজিক দূরত্ব রাখার জন্য সার্বক্ষনিক করা হচ্ছে মাইকিং। নিরাপত্তার জন্য স্থাপণ করা হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। এদিকে সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও দিপাবলী উৎসব নির্বিঘœ এবং শান্তিপূর্ন করতে সব বাহিনীর সমন্বয়ে নানা পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মো: খাইরুল আলম। পোষাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোষাকধারী পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং র্যাব উৎসবকালীন সময়ে সার্বক্ষনিক মহাশ্মশানের নিরাপত্তা নিশ্চিত দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।