মিয়ানমারে ফের গুলি, নিহত ৯

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক:
মিয়ানমারে সেনা বাহিনীর অভ্যুত্থানবিরোধীদের ওপর নিরাপত্তা রক্ষীদের চালানো গুলিতে নয়জন নিহত হয়েছেন। বুধবার এ ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাতে জানিয়েছে রয়টার্স।

মান্দালয় ও মনুয়ায় গুলিতে আহত হয়েছেন অনেক বিক্ষোভকারী। মান্দালয়ে দুজন নিহত হয়েছেন। চারজন মারা গেছেন মনুয়ায়। এছাড়া ইয়াঙ্গুন এবং মিইয়ইগেইনে আরও তিনজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন চিকিৎসক বলেছেন, মান্দালয়ে নিহতদের একজনের বুক ভেদ করে গুলি ঢুকেছে। দ্বিতীয় একজন নারী। ১৯ বছর বয়সী ওই তরুণীর মাথা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। দুইজনই ঘটনাস্থলে মারা যান।

ফ্রন্টিয়ার ম্যাগাজিন জানিয়েছে, মান্দালয়ে হাজার হাজার মানুষের সমাবেশে পুলিশ প্রথমে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। কিছু সময় পরে তারা ফের একই স্থানে সমবেত হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি চালায়।

মনুয়ায একজন উদ্ধারকারী জানিয়েছেন, তিনি চারজনের লাশ দেখেছেন। অবশ্য মনুয়া গেজেট নামের স্থানীয় একটি সংবাদপত্র নিহতের সংখ্যা ৫ বলে উল্লেখ করেছে। এছাড়া সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে পুলিশের গুলি বর্ষণ ও তাতে অসংখ্য আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে তারা।

মিয়ানমার নাউ ওয়েবসাইটের খবরে জানা গেছে, ইয়াঙ্গুনে ৩০০ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাছাড়া তাদের ওপর চড়াও হয়ে ভয়াবহ লাঠিচার্জ করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, শত শত মানুষকে সেনা ও পুলিশি তদারকিতে ট্রাকে তোলা হচ্ছে।
মিয়ানমারে গত ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। তবে এনএলডি নিরঙ্কশ জয় পেলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। তারা নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে ওইদিন ভোরে স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ এনএলডির শীর্ষ বেশ কিছু নেতাকে গ্রেপ্তারের পর এক বছরের জন্য মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী। ক্ষমতায় বসেন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং।

সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের পর গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও গ্রেপ্তার নেতাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে সাধারণ মানুষ। মিয়ানমার সেনাবাহিনী বলছে, বিক্ষোভ ঠেকাতে তারা ন্যূনতম শক্তি প্রয়োগ করছে।

দেশটিতে এরই মধ্যে বুধবারের সহিংসতা ছাড়াও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতায় ২১ আন্দোলনকারী ও এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *