নতুন দরিদ্রের হিসাব মানেন না অর্থমন্ত্রী

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক:
সরকারি হিসাব না পাওয়া পর্যন্ত দেশের বেসরকারি সংস্থাগুলোর নতুন দরিদ্রের হিসাব মানতে নারাজ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন দরিদ্রের এই হিসাব আমি স্বীকার করি না। যাদের কাছে তালিকা আছে ২ কোটি বা ১ কোটি বা ১০ জন, এই তথ্য তারা কোথায় পেয়েছে, আগে তা জানা দরকার।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, গবেষণা করার জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে যত দিন তথ্য পাওয়া না যাবে, তত দিন অন্য প্রতিষ্ঠানের তথ্য গ্রহণ করার সুযোগ নেই।

প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে কোনো দুর্বলতা নেই বলেও মনে করেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, ‘বাজেটটি যখন বাস্তবায়ন করা শুরু হবে, তখন দেখা যাবে কারা উপকারভোগী। যাদের নিয়ে আপনাদের প্রশ্ন, তাদের জন্যই আমরা এবারের বাজেট সাজিয়েছি।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি এবং প্রধানমন্ত্রীও নির্দেশ দিয়েছেন যে নিম্ন আয়ের মানুষদের চিহ্নিত করতে হবে। এটা যদি করতে পারি এবং অর্থনীতির মূল ধারায় নিয়ে আসতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আমাদের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে। এ নীতিতে আমরা বিশ্বাস করি এবং সেভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমে আমাকে বলতে হবে কোন কোন জায়গায় আপনারা ব্যত্যয় দেখেছেন। পুরো তালিকা আমাকে দিতে হবে। সেগুলো দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে বিশ্বব্যাংক যে ৫ দশমিক ১ শতাংশ প্রাক্কলন করেছে, তার চেয়ে অনেক বেশি অর্জিত হবে। আগামী অর্থবছরের জন্য সরকারের লক্ষ্যমাত্রা সাত দশমিক দুই শতাংশ। অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির যে সাম্প্রতিক গতিধারা, তাতে এই অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ওপরে থাকবে বাংলাদেশ।

সম্প্রতি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) এক জরিপের ফলাফল বলছে, কোভিডের আঘাতে দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ। ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশে এই নতুন দরিদ্র শ্রেণির সংখ্যা জনসংখ্যার ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ হয়েছে, ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত যা ছিল ২১ দশমিক ২৪ শতাংশ।

ওই জরিপে যারা সাধারণত দারিদ্র্যসীমার ওপরেই বসবাস করে কিন্তু যেকোনো অভিঘাতে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে পারে, তাদের নতুন দরিদ্র হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে নতুন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেশি। এ বছরের মার্চ পর্যন্ত যেখানে শহরাঞ্চলে নতুন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৫৯ শতাংশ, সেখানে গ্রামাঞ্চলে তা ৪৪ শতাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *