নাগরিক ডেস্ক : চলায়-বলায় দারুণ সাবলীল স্বাচ্ছন্দ্য, নায়কোচিত গ্ল্যামার মিশে ছিল সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে। চেহারায় ও হাবভাবে অন্যরকম, সেই সঙ্গে যোগ হয়েছিল দৈহিক সৌষ্ঠব এবং অনাবিল হাসি। এসব কিছুই অন্যদের থেকে আলাদা করেছিল উত্তম কুমারকে। তার অভিনয়ে থিয়েটারের গন্ধ ছিল না। সাদা-কালো যুগ থেকে শুরু করে রঙিন, অভিনয়ের সময় ক্যামেরা নামক যন্ত্রটিকে তিনি মোটেও পাত্তা দেননি। সুদর্শন চেহারা, অভিনয়ের সৃজনক্ষমতা আর কঠোর শ্রমের গুণে উত্তম কুমার দখল করে আছেন বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ আসনটি। বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা উত্তম কুমারের আজ ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮০ সালের এই দিনে মাত্র ৫৩ বছর বয়সে তিনি কলকাতায় মারা যান। গুনী এ অভিনেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানালো ডৈইলি নাগরিক।
১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর। উত্তর কলকাতার আহিরিটোলায় মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন উত্তম কুমার। তখন অবশ্য তিনি অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। কলকাতার গিরিশ মুখার্জি রোডের বাসিন্দা সাতকড়ি চট্টোপাধ্যায়ের বড় ছেলে। ১৯৪২ সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় পাস করলেন। ১৯৪৫ সালে বিকম স্ট্যান্ডার্ড পাস করে ভর্তি হলেন কলেজে। কিন্তু কলেজে পড়া আর বেশিদূর এগোল না। টানাপড়েনের সংসার। চলল চাকরির সন্ধান। সেই সঙ্গে অভিনয়ের প্রতি ঝোঁকটা বেড়েই চলল ক্রমে। মনের গহিনে চলল রুপালি পর্দায় অভিনয় করার সোনালি স্বপ্ন বোনা। সুযোগ মিলল ১৯৪৭ সালে। বাড়ির ভাড়াটে গণেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাধ্যমে ভোলানাথ আঢ্যের ‘মায়াডোর’ নামের একটি হিন্দি ছবিতে ছোট্ট একটা চরিত্র পেলেন অরুণ। দৈনিক পাঁচ সিকি পারিশ্রমিকে পাঁচ দিন অভিনয় করলেন। কিন্তু ‘মায়াডোর’ মুক্তি পায়নি। দ্বিতীয় সুযোগটি এলো পরের বছরই। ‘দৃষ্টিদান’ ছবিতে অভিনয় করলেন নায়কের ছোটবেলার ভূমিকায়। কমিশন বাদ দিয়ে এ ছবিতে তার পারিশ্রমিক দাঁড়াল সাড়ে ১৩ টাকা। ওই বছরের মাঝামাঝি সময়ে তিনি কাজ শুরু করলেন নবেন্দুসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত ‘কামনা’ ছবিতে। নায়কের ভূমিকায়। পারিশ্রমিক এক হাজার ৫০০ টাকা। ১৯৪৯ সালে মুক্তি পেল ‘কামনা’। কিন্তু সুপার ফ্লপ। ভীষণ মুষড়ে পড়লেন তিনি। এর পর সরোজ মুখার্জির ‘মর্যাদা’ ছবিতে অভিনয় করলেন নায়ক হিসেবে। তবে পরিচালকের সঙ্গে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নাম পাল্টে অরুণ কুমার হয়ে গেলেন অরূপ কুমার। কাজ হলো না। দর্শকপ্রিয়তা পেল না ছবিটি। আবার নাম পরিবর্তন করা হলো। উত্তম কুমার। ‘সহযাত্রী’ ছবিতে উত্তম কুমার নামে অভিনয় করলেন। অসফল হলো ছবিটি। অসফলতার ধারাবাহিকতায় যোগ হলো আরও একটি ছবি ‘নষ্টনীড়’। এরপর ‘সঞ্জীবনী’, ‘কার পাপে’, ‘বসু পরিবার’। সেটা ১৯৫২ সাল। আশাতীত সাফল্য পেল ‘বসু পরিবার’। ঘুরে দাঁড়ালেন তিনি। এলো ১৯৫৩। মুক্তি পেল তার অভিনীত ‘সাড়ে চুয়াত্তর’। ছবির নায়িকা সুচিত্রা সেন। সুপারহিট। এর পর শুধুই সাফল্য। ইতিহাস। নায়ক উত্তম কুমার হয়ে উঠলেন ‘মহানায়ক উত্তম কুমার’।
৩০ বছরের ক্যারিয়ারে তার অভিনীত ছবির সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। বিপরীতে নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ৩৫ জন অভিনেত্রী। সুচিত্রা সেনের সঙ্গে অভিনয় করেছেন ২৯টি ছবিতে। সর্বাধিক ৩২টি ছবিতে অভিনয় করেছেন সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে।এদিকে শুক্রবার এক আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে- উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে ও গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।