মুক্তিযোদ্ধাকে অমানোবিক নির্যাতন আ’লীগ নেতার

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক:
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার সঙ্গীকে ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ দলীয় সাবেক চেয়ারম্যান নেতৃত্বে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে সোমবার বিকালে হামলাকারীরা মানববন্ধন করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান জয়কে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নে অবাঞ্ছিত করার হুশিয়ারী দিয়েছেন।

আল নাহিয়ান খান জয়ের পৈত্রিক নিবাস এই ইউনিয়নে। নির্যাতনের শিকার মুক্তিযোদ্ধা আ: মজিদ সরদার (৭২) ও তার সঙ্গী আজাহার ওরফে মনু (৬৫) বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মাহাবিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের বিগত চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে রোববার সন্ধ্যায় দুজনের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। তারেকের বড় ভাই সরদার খালেদ হোসেন স্বপন বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি। জানা গেছে, ২০০৫ সালের ১৫ এপ্রিল স্বপন ও তারেকের বাবা আবুল কাশেম সরদার খুন হন।

এ হত্যা মামলায় নি¤œ আদালতে মুক্তিযোদ্ধা আ: মজিদ সরদারসহ ১০ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড হয়। পরবর্তীতে উচ্চাদালত থেকে মজিদ সরদার বেকসুর খালাস পেয়ে ১৬ বছর কারামুক্ত হন। তবে স্বপন ও তারেকের দাপটে নিজ গ্রামে যেতে পারছিলেন না। রোববার সন্ধ্যায় গ্রামে গেলে তারেকের নেতৃত্বে মজিদসহ তার সঙ্গীকে আটকে নির্যাতন করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ সরদার জানান, বাড়িতে যাওয়ার জন্য আজাহার ওরফে মনুকে সঙ্গে নিয়ে রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ঠাকুরমল্লিক গ্রামে যান।

কামরুল কবিরাজের চায়ের দোকানে পৌছলে সাবেক চেয়ারম্যান তারেকের নেতৃত্বে দুজনকে আটক তারেকুলের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তারেক নিজে হাতুরি দিয়ে আ: মজিদের বাম হাতের আঙ্গুল থেতলে দেয় ও লোহার রড দিয়ে দুজনকে বেদম মারধর করে। খবর পেয়ে গভীর রাতে আগরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা তারেকের বাড়িতে গিয়ে দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান তারেকুল ইসলাম তারেক বলেন, তাকে হত্যার জন্য আটজনের একটি দল গ্রামে ঢুকেছিল। জনগণ ধাওয়া করে দুজনকে আটক করেছে। পরে পুলিশ এসে তাদের নিয়ে যায়।

কোন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবী করেন তারেক। সাবেক চেয়ারম্যান আরও বলেন, তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তিনি বাদী হয়ে সোমবার বিকালে মজিদ ও মনুসহ কয়েকজনের নামোল্লেখ করে বাবুগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে সোমবার বিকালে উপজেলা আওয়ামীলীগ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে। ছাত্রলীগ সভাপতি জয়কে অবাঞ্ছিত করার অভিযোগ প্রসঙ্গে তারেক বলেন, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম হিমু উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও ছাত্রলীগ সভাপতির চাচাত ভাই। এজন্য উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সরদার খালেদ হোসেন (তারেকের ভাই) ছাত্রলীগ সভাপতিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার কথা বলেছেন।

বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, মারধরে শিকার বৃদ্ধ মজিদ সরদার এবং উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি খালেদ হোসেন স্বপন ও তারেক একই বাড়ির বাসিন্দা। স্বপন-তারেকের বাবা কাশেম সরদার হত্যা মামলার আসামী মজিদ সরদার। তিনি দীর্ঘদিন পর গ্রামে ঢুকলে স্বপন-তারেকের অনুসারীরা তাকে মারধর করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় মারধরের শিকার দুই বৃদ্ধের পক্ষে কোন অভিযোগ থানায় দেয়া হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *