“রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের চাকরবাকরদের গুনাবলীও নেই”-বললেন জাফরউল্লাহ

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের এবার চাকরের সঙ্গে তুলনা করলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি চাকর-বাকরের কাছে ক্ষমা চাইছি। এ রাজনৈতিক নেতা–কর্মীদের চাকর-বাকরের গুণাবলিও নেই।’

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন। ছাত্র অধিকার পরিষদের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচিতি সভা উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এর আগে, গত ৭ সেপ্টেম্বর ডয়চে ভেলে বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাফরুল্লাহ চৌধুরী মির্জা ফখরুল সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘বেচারা বাড়ির চাকর-বাকরের মতো আছে’। সেই বক্তব্যের সূত্র ধরে আজকের সভায় জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমার সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যে আমার রাজনৈতিক স্নেহাস্পদ ব্যক্তিরা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন, কষ্ট পেয়েছেন। তাদের চাকর-বাকরের সঙ্গে তুলনা করেছি। আমি চাকর-বাকরের কাছে ক্ষমা চাইছি। এ রাজনৈতিক কর্মীদের চাকর-বাকরের গুণাবলিও নেই। তাদের না কবজিতে জোর আছে, না মাথা ঘোরানোর অধিকার আছে। বাড়িতে চাকর-বাকরকে যেভাবে ইচ্ছা অত্যাচার করেন, একসময় ঘাড় ত্যাড়া করে বলে যে “থাকুক আপনার চাকরি, বাড়ি চইলা গেলাম।” এই রাজনৈতিক কর্মীদের একজনেরও তা নেই। চাকর-বাকর ভাইয়েরা, আপনাদের আমি ছোট করেছি, আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’

জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমি তারেক রহমানের জায়গায় জাইমা রহমানকে ক্ষমতা দিতে বলিনি। বলেছি, তাকে (জাইমা) রাজনীতি শিখতে দিন, রাজপথে আসতে বলেন। রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিতে হলে রাজপথে হাঁটতে হয়। অনেকে আমার কথায় কষ্ট পেয়েছেন বলে দুঃখিত। আমার বয়স হয়েছে, এটা একদম সঠিক। কিন্তু কথায় কথায় আমাকে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয় না। কারণ আমার সততা ও সাহস। আমি জনগণের পক্ষের লোক, আমার অন্য কেউ নেই।’

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের উদ্দেশে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘মাননীয় বিচারপতিগণ, কোন বইতে কার বক্তৃতা পড়ানো হবে, সেই সিদ্ধান্ত দেওয়া কি আপনাদের কাজ? তাহলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কেন রাখা হয়েছে? অথচ ছানি অপারেশনের জন্য যে ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা নেওয়া হয়, তা নিয়ে কথা বলেন না। ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের ২৬ জন এখনো জেলে আছেন, একটা সুয়োমোটো দিতে পারেন না?’

প্রবীণ চিকিৎসক ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান জাফরুল্লাহ আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার আবার ভয়ানক চক্রান্ত শুরু করেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করে ভোটকে নতুন পদ্ধতিতে সর্বস্বান্ত করতে চাইছে। এখন সজাগ না হলে, বুদ্ধিজীবীদের সবাইকে সংগঠিত না করা হলে গণতন্ত্রের কবর তো হচ্ছেই, মাফিয়া রাষ্ট্রেরও জন্ম হচ্ছে। আমরা কেউ শান্তিতে থাকতে পারব না। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদের রাস্তায় থাকতে হবে। দেশে কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।’

ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান সভায় সভাপতিত্ব করেন। সংগঠনের বিগত কমিটির কার্যপরিধির নথি নতুন কমিটির নেতাদের কাছে হস্তান্তর করেন তিনি। এতে অন্যদের মধ্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের নবনির্বাচিত সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্যা রহমতুল্লাহ, যুব অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আতাউল্লাহ, শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আবদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসাইন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *