সৈয়দ জুয়েল:
সুস্থ রাজনীতি তার নীতি আদর্শ হারিয়েছে বহু আগে। বিশ্বের বহু গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো যেখানে গনতন্ত্রের সুফল পাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র হলেও, এখনও গড়ে ওঠেনি গনতন্ত্র চর্চার অভ্যাস। দেশ স্বাধীন হলেও কখনও স্বাধীন হয়নি গনতন্ত্র। দেশ ছাড়িয়ে প্রবাসে শক্তিশালী গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে থেকে আার্থিক দৈন্যদশা মিটলেও অনেক বাংলাদেশির মানসিক দৈন্যদশার উন্নতি আর হলো কই! বিশেষ করে বাংলা রাজনীতির ধারক, বাহকদের।
শেষ বিশ বছরে দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা যখনই, ইউরোপ আমেরিকা সফরে আসেন, তখনই দুটি বৃহত রাজনৈতিক দলের সদস্যরা বিমান বন্দর বা এই দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ স্থানের সামনে কালো পতাকা বা “গো-ব্যাক” স্লোগান দিয়ে নিজের স্বস্তা অস্তিত্বর জানান দেয়। দিন শেষে এ দুটি দলের ক্ষতি না হলেও ক্ষতি যা হওয়ার তা হচ্ছে দেশেরই।
যেহেতু ইউরোপ, আমেরিকা, ইংল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশিদের অধিকাংশই কোন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততা নেই, তারাও বিতর্কিত হচ্ছেন নষ্ট রাজনীতির জন্য। যেহেতু এসব দেশ গনতন্ত্রের ভাষায় কথা বলে, তাই এখানে এখনও চলমান আছে বাংলা রাজনীতির সদস্যদের কার্যক্রম। তবে বিদেশীরা এহেন কার্যকলাপ দেখে সভ্য রাজনীতি না অসভ্য রাজনীতির চর্চা বাংলাদেশিরা করেন, সেটি অনুমান করতে তাদের তেমন বেগ পেতে হয়না বলেই ধারনা বিশেষজ্ঞদের। আজ হয়তো আওয়ামিলীগ ক্ষমতায়, তাই বিএনপি এ কাজ করছে। আবার ক্ষমতার পালাবদলে বিএনপি বা অন্য দলের যে কেউ আসলে একই ঘটনা ঘটাবে বিরোধীরা।
তার মানে এই নষ্ট রাজনীতি আর আমাদের মাঝ থেকে যাবে বলে মনে হয়না। একটি দেশের ভাবমূর্তি তার রাজনীতির জন্য খারাপ হবে,সেটি হতে পারেনা। এখনই যদি এই নষ্ট রাজনৈতিক অভ্যাসের লাগাম না টানা হয়,আগামী দিনে প্রবাসে বাংলাদেশিদের মাথা নীচু করে চলতে হবে। অবশ্য নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে- একটি সময় দেশ প্রধানরাই বিদেশে রাজনীতি বন্ধ করে দিবে বলে ধারনা করা হয়। আবার উন্নত এ রাষ্ট্রগুলোর সরকার যদি আইন প্রনয়ন বা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলা রাজনীতি বন্ধের আদেশ দেন, কোন বাংলাদেশিই আর রাজনীতি করবেন বলে মনে হয়না।
যতই বুকে লালন, পালন, ধারনের কথা বলুক না কেন। উদার গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে থেকে সভ্য রাজনীতির চর্চাটা যদি না-ই রপ্ত করা হয়,তাহলে এ রাজনীতির ভবিষ্যত যে ঘোর অন্ধকার,তা তো নব্য বালকও হলফ করে বলতে পারবে। দুটি বৃহত রাজনৈতিক দলের আদর্শ যদি দেশের সাধারন মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে সফলতা পেত, তাহলে লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশি প্রবাসে কেন? তাদের মেধা, শিক্ষা, অভিজ্ঞতার তো কমতি ছিলনা! বাবা, মা, ভাই, বোন, বন্ধু, পাড়া পড়শী, দেশ, দেশের মাটি ছেরে কেন পরে থাকেন!
প্রিয়জনের মৃত্যুতেও কবরে এক টুকরো মাটি দিতে না পারা প্রবাসীদের আবার কিসের রাজনীতি! আর যদি রাজনীতির প্রতি অতিমাত্রায় আবেগ,ভালবাসা থাকে,তাহলে বাংলাদেশে ফিরে যেতে তো তাদের বাধা নেই। বরং এরা দেশে গিয়ে রাজনীতি করলে,বাংলাদেশের রাজনীতি পরিপক্ব হত। আর এদের নোংরা রাজনীতির বাতাস থেকে স্বস্তি পেত অধিকাংশ রাজনীতি ছারা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। লাল,সবুজের পতাকা যেন এসব রাজনীতির জন্য কালো না হয়ে যায়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের ভুমিকা সহ বাংলা রাজনীতি বন্ধের উদ্যোগ যেন প্রবাসের রাষ্ট্রগুলোও দ্রুত নেয়, এটি-ই অধিকাংশ শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশিদের একান্তই চাওয়া।