হিজলায় গ্রামবাসীকে বেধরক পেটানোর অভিযোগ কোষ্টগার্ডের বিরুদ্ধে

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : মেঘনা তীরের জনপদ বরিশালের হিজলা উপজেলার বাউশিয়া গ্রাম সংলগ্ন নদীতে ইলিশ নিধনে বাঁধা দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোষ্টগার্ড ও গ্রামবাসীর মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর কোষ্টগার্ড সদস্যরা গ্রামের ভেতর ঢুকে নারী-পুরুষদের নির্বিচারে লাঠিপেটা করেছে বলে গ্রামবাসী অভিযোগ করেছেন। সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় এ ঘটনা ঘটে।

কোষ্টগার্ডের লাঠিপেটায় ৯ মাসের অন্তস্বত্বা গৃহবধু ফারজানা বেগম (২০) গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় তাকে হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। গ্রামবাসী জানিয়েছেন, শাহাবুদ্দিন ঘরামি নামক একজনকে কোষ্টগার্ড আটক করে নিয়ে গেছে।

বাউশিয়া গ্রামের একাধিক বাসিন্দা জানান, নদীর তীরে জেলেদের সঙ্গে ঘটনার জের ধরে কোষ্টগার্ড সদস্যরা গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে নারী-পুরুষদের বেধরক লাঠিপেটা করেছে। বাচ্চু ঘরামি, মাহবুব বাঘাসহ অনেককে বেদম লাঠিপেটা করা হয়েছে।

অন্তস্বত্বা গৃহবধু ফারজানা বেগম জানান, স্বামীর বাড়ি মুলাদী থেকে তিনি হিজলার বাউশিয়া গ্রামে বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। ঘটনার কয়েক মিনিট আগে তিনি পিতা জলিল বেপারীর ঘরে পৌছেন। কোষ্টগার্ড সদস্যরা ঘরের মধ্যে ঢুকে লাঠি দিয়েএ কাধিক আঘাত করলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। স্বজনরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

হিজলা উপজেলায় দয়িত্বরত কোষ্টগার্ড জাহাজের কন্টিজেন্ট কমান্ডার মো. হামিদ গ্রামবাসীর অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনা বাউশিয়া পয়েন্টে জেলেরা ইলিশ নিধন করছিল। কোষ্টগার্ডের জাহাজ সেখানে উপস্থিত হলে জেলেরা জাহাজের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় তাদের ধাওয়া করে নদীর তীর থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। কোষ্টগার্ডের সদস্যরা কারো বাড়ির মধ্যে ঢুকেনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরাও গিয়েছিল।

ঘটনাস্থল হিজলার বড়জালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বর) ঝন্টু হাওলাদার বলেন, তিনি হিজলা বন্দরে ছিলেন। ঘটনার পর কোষ্টগার্ডের সদস্যরা মুঠোফোনে কল দিয়ে তাকে ঘটনাস্থলে ডেকে নেন। তখন গ্রামের লোকজন অভিযোগ করেছে কোষ্টগার্ড বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নারী-পুরুষদের মারধর করেছে।

হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইউনুসের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা তার জানা নেই। হিজলা থানা পুলিশ সেখানে যায়নি। মা ইলিশ রক্ষায় নৌপুলিশসহ পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ ঘটনাস্থলে যেতে পারেন।

উল্লেখ্য, মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করতে গত ৪ অক্টোবর থেকে দেশের সকল জলসীমায় ইলিশ নিধনে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। বরিশালের হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ সংলগ্ন মেঘনায় জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্বিচারে ইলিশ নিধন করছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধা দিলে জেলেরা তাদের ওপর হামলা করছে। এ নিয়ে এসব এলাকায় প্রায়ই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে।##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *