‘ওমিক্রন’ নিয়ে বরিশালে উদ্বেগ

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট:
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’ নিয়ে বরিশালে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে ১৫ নির্দেশনা মানাতে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছে। জেলার সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ারও পরামর্শ দিয়েছে। যদিও নগরীর সব সেক্টরে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন চিহৃই খুজে পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন নগরীর বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানবিদ আহসান কবির বলেন, সোমবার বরিশাল ও পটুয়াখালীতে ২জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত এক সপ্তাহে এভাবে আক্রান্ত থাকছেই। আক্রান্ত ১৭জন এ মাসে সুস্থ্য হয়েছেন। তিনি বলেন, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে সকালে ভার্চুয়ালী সভাও হয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের। জানতে চাইলে অধিদপ্তরের পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস বলেন, করোনা পরিস্থিতির জন্য সব সিভিল সার্জনকে নতুন করে ১৫ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন দেশে এখনও ঢুকেনি। তবে তারা এ নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছেন। সতর্ক হতে পরিকল্পনাও নিচ্ছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১৫ নির্দেশনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জনসমাগম নিরুৎসাহিত করা, বাহিরে বেড় হলেই মাস্ক পড়া, রেস্তোরা-বিনোদন স্পট-সামাজিক অনুষ্ঠানে ধারন ক্ষমতার অর্ধেক মানুষ, গনপরিবহন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মানা, সর্বত্র ব্যাপক প্রচারনা চালানো।

সোমবার বেলা ১২টায় সরেজমিনে নগরীর গীর্জামহল্লা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশের মুখে মাস্ক নেই। দুটি বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ ও রুপাতলীতেও পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন চেস্টাই নেই। একই অবস্থা বরিশাল নৌবন্দরে। আর স্কুর কলেজগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে লোকদেখানো। বরিশাল বিএম কলেজ ও হাতেম আলী কলেজে ছাত্র-ছাত্রী এমনকি অনেক শিক্ষকেরও মাস্ক দেখা যায়নি।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর বরিশাল জেলা সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুইজারল্যান্ড সফর ওমিক্রনের খবরে বাতিল করেছেন। সুতরাং এ ব্যপারে উদাসীনের সুযোগ নেই। স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য প্রশাসন, সুধিসমাবেশ থেকে নতুন করে ব্যাপক প্রচারনা করা জরুরী। আমরা তো স্বাস্থ্যবিধিতে ঢিলেঢালা ভাব এনেই ফেলেছিলাম। মাস্ক পড়াও একেবারে ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন যে ভ্যারিয়েন্ট আসছে তা নিয়ে চিন্তারই কথা।

বরিশাল জেলা স্বাধীনতা প্রধান শিক্ষক পরিষদের সাধারন সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, রাস্তাঘাটে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবনতা ১০ ভাগও নাই। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানার চেস্টা চলছে। কিন্তু ক্যাম্পাস দিয়ে বেড় হয়ে মাস্ক খুলে ফেললে শিক্ষকদের কি করার আছে। এটা তো অভিভাবক দেখবেন। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মানা নাগরিক দায়িত্ব। নতুন ভ্যারিয়েন্টের জন্য স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সতর্ক করে দিবেন বলে জানান তিনি।

এব্যপারে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা: মনোয়ার হোসেন বলেন, করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন ঠেকাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১৫ নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজে নেমে পড়েছেন তারা। তিনি রোববাই চিঠি পেয়ে জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে তারা ব্যবস্থা নিবে। আর স্বাস্থ্য বিভাগ এখন থেকেই মোটিভেশন করবে। তিনি বলেন, করোনা সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু একেবারে শেষ হয়নি। প্রতিদিনই ২-১জন আক্রান্ত হচ্ছে পুরোনো ভেরিয়েন্টে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বেড়ে যেতে পারে। ভেকশিন না দিলে করোনা নিয়ন্ত্রন সম্ভব না।

আর ওমিক্রন নিয়ে চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। এটি যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, বিদেশীরা আসলে যাতে আইস্যুলেশনে থাকে সেটি কঠোরভাবে মানতে হবে। তিনি এজন্য জনগনকে ৩টি বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। এগুলো হচ্ছে- মাস্ক বাধ্যতামুলক, শারিরক দুরত্বে এবং হাত ধোয়া। ওমিক্রন আসলে অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে বলে সাফ জানিয়ে দেন সিভিল সার্জন ডা: মনোয়ার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *