বাবুগঞ্জে আ’লীগ সভাপতির সাথে সম্পাদকের হাতাহাতি:সংঘাত

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট ॥ জেলা পরিষদের সদস্য পদে উপ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর পরাজয় নিয়ে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের মধ্যে হাতাহাতি ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টিা হামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে দুই নেতার মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি হয়। পরে তাদের সমর্থকদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলায় কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়। আওয়ামীলীগের বিবাদমান দুইপক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে থাকায় বাবুগঞ্জ উপজেলা সদরে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়, গতকাল উপ নির্বাচনের ভোট গ্রহন শেষে বাবুগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে গণনা চলছিল। সংলগ্ন উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ফলের অপেক্ষা করছিলেন। এরই মধ্যে খবর পৌছে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ইসরাত জাহান তাপসীকে পরাজিত করে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মাইনুল ইসলাম পারভেজ জয়ী হয়েছেন। দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ের জন্য উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী এমদাদুল হক দুলাল এবং সাধারন সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার খালেদ হোসেন স্বপন একে অপরকে দায়ী করেন। তারা পরস্পরকে দলের সঙ্গে বেঈমানী করার অভিযোগ তুলে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে লিপ্ত হন। এসময় দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত আরও কয়েকজন উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র দুুই নেতাকে নিবৃর্ত্ত করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের সমর্থকরা বিক্ষোভ ও হামলা পাল্টা হামলায় লিপ্ত হন।
হাতাহাতির কথা স্বীকার করে সাধারন সম্পাদক খালেদ হোসেন স্বপন বলেন, সভাপতির ষড়যন্ত্রে মাধবপাশা ও রহমত ইউনিয়নের ভোটাররা ভোট না দেয়ায় আওয়ামীলীগের প্রার্থী পরাজিত হয়েছে। তিনি এর প্রতিবাদ করেছেন মাত্র। তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয় ত্যাগ করার পর সভাপতি দুলাল লোকজন নিয়ে বাবুগঞ্জে সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে। এ খবর পেয়ে তার (সাধারন সম্পাদক) সমর্থকরা প্রায় ৫ কিলোমিটার দুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রহমত বাজারে পাল্টা বিক্ষোভ করে।
স্বপন বলেন, তিনি এ খবর পেয়ে রহমতপুরে এসে সমর্থকদের নিয়ে এলাকা ত্যাগ করার পর সভাপতি দুলাল রহমতপুরে এসে পাল্টা বিক্ষোভ করে। এসময় রহমতপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পদক মিলনকে মারধর ও তার পরিবহন কাউন্টার ভাংচুর এবং আওয়ামীলীগ কর্মী নুরে আলমসহ কয়েকজনকে মারধর করেছে দুলালের সমর্থকরা।
সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী এমদাদুল হক দুলাল পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, সাধারন সম্পাদক খালেদ হোসেন স্বপন ও তার পরিবার চিহিৃত সন্ত্রাসী। এক সময়ে সে ক্রসফায়ারের তালিকাভূক্ত ছিল। তার পরিবারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আগরপুর ও কেদারপুরের ভোটাররা আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী তাপসীকে ভোট দেয়নি। স্বপন তার কর্মকান্ড ঢাকতে উল্টো অভিযোগ দিয়ে আমার ওপর হামলা করেছে। রহমতপুরে কাউন্টার ভাংচুর প্রসঙ্গে দুলাল বলেন, কাউন্টার পরিচালনাকারী মিলন চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী ও স্বপনের পোষা সন্ত্রাসী। ওই কাউন্টারে বসেই স্বপন আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছে। এ কারনে ক্ষুদ্ধ জনতা কান্টউন্টারটি ভাংচুর করে। এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ বিভিন্ন স্পটে টহল দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, জেলা পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ফারজানা ওহাব বাবুগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় শুন্যপদে গতকাল উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাইনুল হোসেন পারভেজ পেয়েছেন ৩৫ ভোট ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ইসরাত জাহান তাপসী পান ২৪ ভোট। এ নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৪ জন, ভোটার ৬ ইউনিয়নের ৮০ জন চেয়ারম্যান ও মেম্বর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *