বিসিসির ঘটনাবহুল নির্বাচনের এক বছর আজ

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট ॥ বরিশাল সিটি করপোরেরশনের (বিসিসি) নির্বাচনের ঘটনাবহুল একটি নির্বাচনের একবছর পূর্ন হলো আজ ৩০ জুলাই। ২০০২ সালে বরিশাল পৌরসভা বিসিসিতে উন্নীত হওয়ার পর চতুর্থ নির্বাচন ছিল এটি। প্রচারাভিযানের শুরু থেকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের একক আধিপত্য, ভোটের দিন কেন্দ্র দখলের অভিযোগে সকাল ১১টায় আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ছাড়া সকল প্রার্থীর একযোগে নির্বাচন বর্জন, নির্বাচন কমিশনের ১৭ কেন্দ্রের ফল স্থগিত, রেকর্ড পরিমান ভোট ব্যবধানে আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর জয়লাভসহ নানা ঘটনায় এটি বিসিসির বিগত ৩টি নির্বাচনের চেয়ে ছিল ব্যতিক্রম।
বিসিসির চতুর্থ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর থেকেই নানা ভাবে এগিয়ে ছিল আওয়ামীলীগ। বিএনপি নির্বাচনে অংশনিলেও অনেকটাই ছিল কোনঠাসা। অপরদিকে নিজেদের সুতিকাগারে প্রথমবারের মতো বিসিসি নির্বাচনে অংশ নিয়ে ব্যতিক্রমি প্রচারনায় সকলের নজরকারে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বাসদের মেয়র প্রার্থী ডা. মনিষা চক্রবর্তীও প্রচারনায় তাক লাগিয়েছিলেন।
নির্বাচনে প্রথম ব্যতিক্রমি ঘটনা ঘটে ৩টি সাধারন ও একটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিায় ৪ জন কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে। যা বিগত ৪টি নির্বাচনে ঘটেনি। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয়ায় সাধারন ওয়ার্ড ১৫, ১৬ , ১৯ এবং সংরক্ষিত ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এসব ওয়ার্ডে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য করার অভিযোগ থাকলেও তারা এ বিষয়ে মুখ খোলেননি।
ভোটের দিন সকাল থেকে আওয়ামীলীগ সমর্থকদের ১২৩ কেন্দ্রের সবকটি দখল, প্রতিদ্বদ্বি প্রাথীর এজেন্টদের বের করে দেয়া এবং ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে সিল দেয়া, কেন্দ্রের মাঠে ডামি ভোটারদের লাইন দিয়ে দাড় করিয়ে রাখার অভিযোগে বেলা ১১টায় ৫ মেয়র প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেন। এসবের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সকাল ১০টায় সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে হামলার শিকার হন বাসদের মেয়র প্রার্থী ডা. মনিষা চক্রবর্তী। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর রোড সিটি কলেজের সামনে বর্জনকারী ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের সঙ্গে নৌকা প্রতীকের কর্মীদের সংঘর্ষ নির্বাচনে আরও উত্তাপ ছড়ায়। রাতে ঘোষিত ফলে আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ১ লাখ ৭ হাজার ৩৫৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপির মজিবর রহমান সরোয়ার পান মাত্র ১৩ হাজার ১৩৫ ভোট। বিএনপির দূর্গখ্যাত বরিশালে ৯৪ হাজার ২১৮ ভোটের ব্যবধানে এ দলের প্রার্থীর পরাজয় নির্বাচনের ফল সকল মহলে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। নির্বাচন কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল ২৫টি কেন্দ্র ঘুরে অনিয়মের সুনির্দিষ্টট অভিযোগ পাওয়ায় ১৭টি কেন্দ্রের ফল স্থগিত করেন। ফলে নির্বাচন বর্জনকারী ৫ মেয়র প্রার্থীর অভিযোগ আরও মজবুত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *