ব্যতিক্রম ‘বুলবুল’ : আরেক ঘূর্ণিঝড় ‘মাতমো থেকে এটির জন্ম

Spread the love

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ন্য ঘূর্ণিঝড়ের মতো নয়। ব্যতিক্রমী চরিত্রের এমন ঘূর্ণিঝড় সর্বশেষ ১৯৬০ সালের পর দ্বিতীয়বার জন্ম নিলো।

মূলত অন্য আরেকটি ঘূর্ণিঝড় থেকেই বুলবুলের জন্ম। গত ২৪ অক্টোবর ফিলিপাইন সাগরে জন্ম নেয়া ঘূর্ণিঝড় ‘মাতমো’ পরবর্তীতে ৩০ অক্টোবর দক্ষিণ চীন সাগরে এসে বড় ঝড়ের আকার ধারণ করে। এর আগে ফিলিপাইনে প্রচুর বৃষ্টি এবং বন্যা ঘটায় এটি। ঘূর্ণিঝড়ের চরিত্র অনুযায়ী ‘মাতমো’ এরপর পশ্চিম বরাবর এগোতে থাকে।

৩১ অক্টোবর ভিয়েতনাম উপকূলে আঘাত হানে এটি। তখন ঘণ্টায় ওই ঝড়ের গড়িবেগ ছিল ১১২ কিলোমিটার, এবং ভিয়েতনামের কুই নন শহরে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয় ওইদিন। কোনো উপকূলে আঘাত হানার পর পশ্চিমূখী ঘূর্ণিঝড়গুলো দুর্বল হতে থাকে, এবং এক পর্যায়ে নিঃশেষ হয়ে যায়।

কোনো ঘূর্ণিঝড় শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং বড় ধরনের ঝড়ে পরিণত হয় সাধারণত ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপামাত্রা থাকা পানিতে। কিন্তু ভূপৃষ্ঠ যত উষ্ণই হোক না কেন তাতে কোনো ঘূর্ণিঝড় শক্তি সঞ্চয়ের জন্য প্রয়োজনীয় জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করতে পারে না। ফলে কম্বোডিয়ার উপকূলে আঘাত হানার পর মাতমো বলতে গেলে উধাও হয়ে যায়।

কিন্তু দুর্বল ঝড়টি ব্যাংককের ওপর দিয়ে ১৮০০ কিলোমিটার ভূপৃষ্ঠ ঘুরে মিয়ানমারের দিকে চলে আসে। এরপর যখন আন্দামান সাগরে এটি পতিত হয় (যেখানে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস), অনেকটা দৈবক্রমে ‘মাতমো’র অবশিষ্ট ঘূর্ণি পুনরায় শক্তি সঞ্চার করতে শুরু করে।

এরপর নিম্নচাপ আকারে পশ্চিম দিকে এগোতে এগোতে এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরের দিকে নতুন ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়; যার নাম দেয়া হয়েছে ‘বুলবুল’।

নতুন করে শক্তি অর্জনের পর ঘণ্টায় এর বাতাসের গতিবেড় ওঠে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এতে সাগরের ঢেউয়ের উচ্চতা ২৩ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়ে ওঠে। শনিবার রাত থেকে পরদিন রাতের মধ্যে এটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে এসে আঘাত হানতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগ মনে করছে, ঝড়টি আরও শক্তিশালী হয়ে খুবই ভয়াবহ আকার নিতে পারে। আন্দামান সাগরে জন্ম নিয়ে ভূপৃষ্ঠের ওপর দিয়ে ভ্রমণ করে এসে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার উপকূলে আঘাত হানতে যাওয়া চতুর্থ ঘূর্ণিঝড় এটি। আর ১৯৬০ সালের পর এই অঞ্চলে হারিক্যানের মতো শক্তি অর্জন করা মাত্র দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড় এটি।

সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *