নাগরিক রিপোর্টার ॥ পা দিয়ে লিখে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনি (পিএসসি) পরীক্ষা দিচ্ছে অদম্য শিশু মুক্তা মনি (১২)। বিদ্যুৎপৃষ্টের কারনে চিকিৎসায় তার দুটি হাতের কাধের নিচ থেকে কেটে ফেলা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় তার জীবনের এ করুন পরিনিতি হয়। লেখাপড়ার প্রতি অদম্য আগ্রহ তাকে শিক্ষাজীবনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনি।
মুক্তা মনি বরিশালের হিজলা উপজেলার পত্তণীভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। সে একই বিদ্যালয়ের শিক্ষাথীও। পূর্ব পত্তণীভাঙ্গা গ্রামের সেন্টু সরদার ও ঝুমুর বেগম দম্পতির সন্তান মুক্তা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিমা বেগম জানান, বিদ্যুৎ দূর্ঘটনার শিকার মুক্তার দুহাতের কাধের সামান্য নিচ থেকে কেটে ফেলা হয়েছে। এ অবস্থায় তার বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি হয়। ডান পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের সঙ্গে কলম আটকে স্বাভাবিক গতিতে লিখতে পারে সে। এভাবেই সে এবার পিএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। দরিদ্র পরিবারের সন্তান মুক্তার মা ঝুমুর বেগম ঢাকায় একটি গামেন্টেসে চাকুরী করেন। তার ছোট একটি বোন আছে। বাবা সেন্টু সরদার তেমন একটা খোঁজ খবর নেন না বলে প্রধান শিক্ষক জানান। তিনি বলেন, লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ থাকায় বিদ্যালয় থেকে তাকে সাধ্যমত সহযোগীতা দেয়া হয়।
মুক্তার মা ঝুমুর বেগম জানান, সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় থাকতেন তিনি। তৃতীয় শ্রেণীর পড়ার সময় বিদ্যুতের তার ধরায় মুক্তার দুই হাত পুড়ে যায়। পরে দুটি হাতই অকোজো হলে চিকিৎসকরা কাধের নিচ থেকে কেটে ফেলেন। তারপর থেকে সে ডান পা দিয়ে লেখার অভ্যাস শুরু করে।
২০১৯-১১-২১