কিম জং উন বেঁচে আছেন

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট: গত সপ্তাহ থেকে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের গুরুতর অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি তিনি ‘মারা গেছেন’ এমন খবরও প্রচার করে কয়েকটি মাধ্যম। এরই মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা জানান, কিম জং উন অসুস্থ বা করোনা ভাইরাসের কারণে আইসোলেশনে থাকার আশঙ্কা রয়েছে। তবে উত্তর কোরিয়ায় সন্দেহজনক কোনো কর্মকান্ড নজরে আসেনি। সোমবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।
রোববার দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিফিকেশন মিনিস্টার কিম ইয়ন চুল বলেন, ‘সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উত্তর কোরিয়ায় অস্বাভাবিক কিছু ঘটার লক্ষণ দেখা যায়নি।’ গত ১৫ এপ্রিল দাদার জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না কিম। রাষ্ট্রীয় ছুটির দিনে এ গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকায় তাকে নিয়ে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়। গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম জানায়, কিমের হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচার হয়েছে বা তিনি করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য আইসোলেশনে রয়েছেন।
এদিকে মন্ত্রী কিম ইয়ন চুল বলেন, প্রতিবেদনে যে হাসপাতালের কথা বলা হয়েছে, সেটির এ অস্ত্রোপচার করার সক্ষমতা নেই। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় সংসদের ফরেন অ্যান্ড ইউনিফিকেশন কমিটির চেয়ারম্যান ইয়ুন স্যাং হিয়ুন বলেন, কিম জনসম্মুখে না থাকার অর্থ তিনি স্বাভাবিক ভাবে কাজ করছেন না।
‘১১ এপ্রিল থেকে তার কোনো ধরনের আইন প্রণয়ন বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এতে আমরা আশঙ্কা করছি, তিনি হয় অসুস্থ, নাহয় করোনা ভাইরাসের কারণে আইসোলেশনে রয়েছেন।’ এর আগে উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী দেশটিতে নেই। তবে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা তাদের এ দাবি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
সোমবারেও কিমের অবস্থান নিয়ে কোনো ছবি বা প্রতিবেদন দেখা যায়নি উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে। তবে একটি প্রতিবেদনে তারা জানায়, ওনসানে একটি পর্যটন রিসোর্ট নির্মাণে নিয়োজিতে শ্রমিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন কিম। ওই রিসোর্টেই কিম অবস্থান করছেন জানিয়ে এর আগে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দক্ষিণ কোরিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইনের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মুন চাং ইন বলেন, ‘আমাদের সরকারের অবস্থান স্পষ্ট। কিম জং উন বেঁচে আছেন এবং ভালো আছেন। ১৩ এপ্রিল থেকে তিনি ওনসানে রয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোনো সন্দেহজনক কর্মকান্ড চোখে পড়েনি।’
গত সপ্তাহে স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, কিমের ব্যক্তিগত একটি ট্রেন ওনসানে রয়েছে। এ থেকে ধারণা করা যায়, দক্ষিণ কোরিয়ার তথ্য একেবারে ভিত্তিহীন নয়। এদিকে সংশ্লিষ্ট অন্য তিন ব্যক্তি জানান, গত সপ্তাহে কিমকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য চিকিৎসা বিশেষজ্ঞসহ একটি দল উত্তর কোরিয়ায় পাঠিয়েছে চীন।
এর আগেও এভাবে গায়েব হয়েছেন ৩৬ বছর বয়সী এ নেতা। ২০১৪ সালে এক মাসেরও বেশি সময়ের জন্য গায়েব হয়ে যান কিম জং উন। তখনো তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা বিভাগ জানায়, কিমের গোড়ালি থেকে একটি সিস্ট অপসারণ করা হয়েছে। এ সময় কিমকে ছড়ির সাহায্যে হাঁটতে দেখা যায়। উত্তর কোরিয়ায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকায় দেশটি থেকে কোনো তথ্য বের করা অত্যন্ত কঠিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *