করোনায় ধনীদের অধিক মৃত্যু নিয়ে রহস্য

Spread the love

সৈয়দ জুয়েল: পুরো পৃথিবী থমকে আছে করোনা ভীতিতে। অনেক রাস্ট্র তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার চেস্টা করলেও আতঙ্ক পিছু ছাড়ছেনা। মৃত্যু ভয়ে জড়োসড়ো মানুষগুলো ঘর থেকে বাহিরে পা ফেলতেও সন্দেহ উঁকি দেয়- এই বুঝি ঘাপটি মেরে থাকা করোনা মরন কামড় দিবে শরীরে। তবে এখন পর্যন্ত বিশ্বে মৃত্যুর যে হার তাতে এগিয়ে আছে ইউরোপ আমেরিকা।
অনুসন্ধানে দেখা যায় ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলো অন্য দেশগুলোর তুলনায় বেশী বিলাসী জীবন যাপনের পাশাপাশি আরামপ্রিয়। শারীরিক পরিশ্রমের কাজগুলোও তারা অনেক কম করে থাকেন। পক্ষান্তরে অর্থনৈতিক মন্দার দেশগুলো, বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলোতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব অনেক কম। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে এদের পেটানো শরীরকে দূর্বল করতে পারেনি করোনা। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ এখনো জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার লড়াইয়ে প্রতিনিয়ত ঘাম ঝরাচ্ছেন। এই শ্রমের ঘামটুকুই তাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছে অক্সিজেন হিসেবে। উল্টো যারা- ঘর বাহিরে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতি ছাড়া চলতে পারেনা,তাদের জন্য করোনা এক অশুভ বার্তা নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশেও এখন পর্যন্ত মৃতে ধনীরা এগিয়ে। ক্ষরতাপ, ঝড় বৃস্টি উপেক্ষা করে যে মানুষগুলো তৃনমুল পর্যায়ে শ্রমিকের কাজ করছেন, তারা করোনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিজয়ের হাসিতে অনেকটাই এগিয়ে। বৈদ্যুতিক আলোর ঘরের চেয়ে ভাঙ্গা ঘরের বেড়ার ফাঁক গলে জোছনার আলোই এখন বেশী আলো ছড়ায়।
গরীবদের সকালের পান্তা ভাতের কাঁচা মরিচ ও পিঁয়াজের সাথে ধনীদের বাটার, জেম, জেলীর রুটি আজ অনেকটাই দূর্বল হয়ে পরেছে। আজ ধনীদের টাকা থাকলেও বিদেশ গিয়েও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারছেনা। প্রকৃতির এ এক চরম প্রতিশোধ। করোনা বিশ্বের ধনী ও ক্ষমতাধরদের জন্য বড় এক আলপিন হয়ে একটু নাড়া দিয়ে জানান দিল- অর্থ জীবন দিতে পারেনা। হাজার কোটি টাকা থাকলেও যদি মাউন্ট এলিজাবেথের বিছানায় শুয়ে অক্সিজেন নেয়ার শারীরিক শক্তি না থাকে, কি মূল্য এ অর্থের!
মৃত্যুর পরেও তো ঐ সাড়ে তিন হাত, চারহাতও তো পাবেননা। যে মাটির সাথে মৃত্যুর কিছুদিন পরে মিলিয়ে যেতে হবে, জীবিত থাকতে সেই মাটি ও মানুষের মাঝে থেকে জীবনটা উপভোগেই সত্যিকারের শান্তি। যে রিক্সাওয়ালা সারাদিন প্যাডেল ঘুরিয়ে ক্লান্ত হয়ে রাতে ঘুমিয়ে পরলো, সেই প্রশান্তির ঘুম ধনীদের রাজপ্রসাদে আদৌ কি আছে? করোনা ধনীদের অহমিকায় যে ঢিল ছুড়েছে, তাতে বেশ নড়বড়ে এখন তাদের অস্তিত্ব। ফুরিয়ে যায়নি এখনও সময়,চার দেয়ালের মার্বেল পাথর থেকে বেড়িয়ে ভাঙ্গা ঘরের পাশে এসে দেখুন জোছনার জোয়ার।
একটু হাত রাখুন ভাঙ্গা ঘরের জোছনার আলোয় মাখা মানুষগুলোর মাথায়। অন্ততঃ আপনার মৃত্যুর পরে কেউ যেন বলতে পারে- আহা! আর কয়টা দিন বাঁচলে কি এমন ক্ষতি হত! সাথে দু ফোটা ভালবাসার অশ্রু। এক জীবনে এর চেয়ে আর কি চাই?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *