সরকারী বরিশাল কলেজ: নাম পরিবর্তন নিয়ে দুই পক্ষে উত্তেজনা

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট: সরকারি বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তন নিয়ে দুটি পক্ষের বিরোধ জেঁকে বসেছে। বুধবার নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোডে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করেছে। বেলা ১১টা থেকে ১২ পর্যন্ত সমাবেশ চলাকালে ওই এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করেছে। কর্মসুচী চলাকালে কলেজের নাম অপরিবর্তিত রাখার দাবীতে সাবেক ছাত্রনেতাদের ব্যানারে আ’লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী সড়কে গনসাক্ষর গ্রহন এবং নাম পরিবর্তনের দাবীতে বাম সংগঠন বাসদ’র নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। এসময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ দুই পক্ষের মাঝামাঝি অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেস্টা করে।

হঠাৎ করেই সরকারি বরিশাল কলেজের নাম মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের নামে নামকরনের দাবী ওঠে নগরীতে। গত ফেব্রæয়ারীতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শিক্ষা মন্ত্রাণালয়ে এ বিষয়ে সুপারিশ পাঠান হয়। এর ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের মতামত চেয়ে গত ২৯ জুন চিঠি দেয়। বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর থেকে সাবেক ছাত্রনেতাদের ব্যানারে একটি পক্ষ নাম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করে আসছেন। কিন্তু নাম পরিবর্তনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে নগরীর সাংস্কৃতিক ও বাম সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বুধবার সকালে নগরীর সদর রোডে সরকারি বরিশাল কলেজের নাম মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের নামকরন বাস্তবায়নের দাবীতে সমাবেশ করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। অপরদিকে নাম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে একই সময়ে একই স্থানে কলেজের সাবেক সাবেক শিক্ষার্থী ব্যানারে গণস্বাক্ষর গ্রহন ও সমাবেশ করা হয়। মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বরিশাল কলেজের সাবেক ভিপি অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর এ গরসাক্ষর ও সমাবেশে বক্তৃতা করেন।

সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন ও আওয়ামীলীগ নেতা হাসান আহমেদ বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব খানের নেতৃত্বে কয়েকশ নেতাকর্মী সকাল ১০টার আগের অশ্বিনী কুমার হল সংলগ্ন সদর রোডের পূর্ব পার্শ্বে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ শুরু করে।

অপরদিকে বাসদ নেত্রী ডা. মণীষা চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক নারীসহ কয়েকশত নেতাকর্মী সকাল সাড়ে ১০টায় ফকির বাড়ি সড়কের কার্যালয় থেকে তাদের দাবীর পক্ষে মিছিল বের করে। মিছিলটি সদর রোড অশ্বিনী কুমার হল অতিক্রম করে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার অশ্বিনী কুমার হল এলাকায় ফিরে আসে। তারা নাম পবির্তনের বিরোধীকারীদের অবস্থানের ঠিক বিপরীত মুখে সদর রোডের পশ্চিম পাশে দাড়িয়ে সমাবেশ শুরু করে। মাইকে উভয় পক্ষের উত্তেজিত বক্তব্যে সেখানে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক ভিপি অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর সেখানে এসে নাম পরিবর্তনে বিরোধীকারীদের সমাবেশে বক্তৃতা করেন।

এদিকে বাসদ বেলা ১২টায় সমাবেশ শেষ করে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় গিয়ে স্মাারকলিপি দেয়। অপরদিকে নাম পরিবর্তনে বিরোধীতাকারী সাবেক ছাত্রনেতারা গন স্বাক্ষর গ্রহন কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
প্রসঙ্গত, সরকারী বরিশাল কলেজ ১৯৬৩ সালে ‘বরিশাল কলেজ’ নাম দিয়ে প্রথমে নাইট ও পরে দিবাকলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৬ সালে কলেজটি ‘সরকারী বরিশাল কলেজ’ নামে জাতীয়করন করা হয়। সম্প্রতি নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবে শিক্ষামন্ত্রনালয় থেকে মতামত চাওয়ার খবর চাউর হওয়ায় দুটি পক্ষ নগরীতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। নাম পরিবর্তনের বিরোধীতা করে শনিবার কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ব্যানারে নগর আওয়ামীলীগ সমাবেশ করে। এর জবাবে বাম সংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো মঙ্গলবার ১০১ সদস্যের মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের নামকরন বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *