নাগরকি রিপোর্ট: দক্ষিনাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ন স্থান পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা, পায়রা সমুদ্র বন্দর, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরগুনার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কিংবা পাথরঘাটা মৎস্য অবতারন কেন্দ্র যেতে পাড় হতে হয় পায়রা নদীর লেবুখালী ফেরিঘাট। ওই এলাকার গুরুত্ব বিবেচনাই হয়তো ফেরিঘাট সংলগ্ন স্থাপিত হয়েছে শেখ হাসিনা সেনানিবাসও। কিন্তু এই লেবুখালী ফেরিঘাটের দুর্ভোগ যেন নিত্যদিনের। জোয়ার এলেই ঢুবে যায় ঘাটের এ্যাপ্রোচ সেতু থেকে শুরু করে পন্টুনও। এই ঈদে গত এক সপ্তাহ ধরে যাত্রীদের সাঁতরে উঠতে হয় ফেরিতে। দীর্ঘদিন ধরে এই দুর্ভোগের কারনে দেশ বিদেশ থেকে আসা পর্যটকদের কাছে ভাবমূর্তি ক্ষুন্নও হচ্ছে বলে সংশ্লিস্টরা দাবী করেছেন। অবশ্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও ফেরি বিভাগের দুর্ভোগ রোধে তেমন কোন উদ্যোগ না থাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
শনিবার খোজ নিয়ে জানা গেছে, কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রে দৈনিক ৪ থেকে ৫ হাজার পর্যটক রয়েছে। শনিবারও প্রচুর পর্যটক রয়েছে। বিশেষ করে করোনার কারনে যুবকরা মোরসাইকেল নিয়ে কুয়াকাটা আসছেন। এদের বেশ কয়েকজন পর্যটক লেবুখালী ফেরিঘাটের দুর্ভোগের কথা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
শুক্রবার বিকেল ৪টায় কুয়াকাটা থেকে লেবুখালী ফেরিঘাটে পৌছান মামুনুর রশিদ নামে একজন ট্যুরিস্ট। তিনি জানান, সেনানিবাস সংলগ্ন বরিশালের অংশে ঘাটের পশ্চিম পাশের গ্যাংওয়ে পানিতে তলানো। প্রায় ২শ থেকে ৩শ হাত রাস্তা ডুবে গেছে। অন্যপাশে ভাল গ্যাংয়ে থাকলেও সেটি সচল করছে না। তিনি বলেন, ফেরিতে উঠতে গেলে বাসের সামনের অংশ ডুবে যায়। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ছে মোটরসাইকেল আরোহী ও তিন চাকার যানবাহনের যাত্রীরা। এই অবস্থা চলছে গত রোববার (২ আগস্ট) থেকে। গত ৬ আগস্ট ঢাকা থেকে কুয়াকাটা ভ্রমনে আসা রিয়াজ হোসেন নামে এক ট্যুরিস্ট বলেন, এ রুটে যাত্রীবাহী পরিবহন স্বাস্থ্যবিধি মানছে। ফেরিঘাটে দুর্ভোগ আরও চরম।
কুয়াকাটা-ঢাকা যাত্রীবাহী বাস হিমি এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্তাধীকারী জাকির হোসেন বলেন, পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা, পায়রা সমুদ্রবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ন স্থানে চলাচলের জন্য লেবুখালী ফেরিঘাট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। ঘাট সংলগ্ন রয়েছে শেখ হাসিনা সেনানিবাস। অথচ এই ঘাটে দুর্ভোগ যেন নিত্যদিন। ঈদ মৌসূমে হাজার হাজার মানুষ আটকা পড়ছে ওই ঘাটে। এর কারন হিসেবে জানান, ঘাটের প্রায় ২০০ ফিট এ্যাপ্রোচ সড়ক পানির নিচে ডুবে থাকে প্রায়ই। গত এক সপ্তাহ ধরে এমন অবস্থায় বাসের একাংশ ডুবে যাচ্ছে। ছোট যানবাহনগুলো চলতেই পারে না। আর সাধারন মানুষকে তো সাতঁরে ফেরিতে উঠতে হয়। তিনি বলেন, ফেরির এক শ্রেনীর স্টাফ তেল চুরি করেন। তারা বাড়তি পৈরি না দিয়ে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে (০১৭৩০৭৮২৭৯২) একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এব্যাপারে পটুয়াখালী ফেরি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ওমর ফারুক বলেন, বন্যার জন্য এ্যাপ্রোচ রাস্তা ডুবে গেছে। ঘাট তো ঠিকই আছে। ক’দিন ধরে অল্প সময়ের জন্য এমনটা ঘটছে। তিনি বলেন, হঠাৎ বন্যা হওয়ায় এক্ষেত্রে কিছুই করার নেই। দীর্ঘদিন ধরে এ ফেরিঘাটে দুর্ভোগ প্রসঙ্গে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।