নাগরিক ডেস্ক: প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের স্কুল ফিডিং কার্যক্রমের আওতায় খিচুড়ি রান্নার প্রশিক্ষণ নিতে ৮-১০ জন কর্মকর্তার একটি টিম বিদেশ যাবেন। তাদের জন্য ব্যয় হবে ৫ কোটি টাকা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) স্কুল ফিডিং কার্যক্রমের প্রকল্প পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এশিয়ার বিভিন্ন দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কীভাবে খিচুড়ি রান্না করা হয়, এর পরিবেশ ও পরিবেশন দেখতে এই প্রকল্পের আওতায় বেশকিছু কর্মকর্তা বিদেশ সফর করবেন। কবে কতজন বিদেশ সফর করবেন সে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
তিনি বলেন, প্রতি ৫ বছর পরপর এ প্রজেক্টের নবায়ন করা হয়। চলতি বছরের ডিসেম্বরে এ প্রজেক্টের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। জানুয়ারিতে নতুন প্রজেক্ট শুরু হবে। যেসব কর্মকর্তা নতুন যুক্ত হবেন তাদের অভিজ্ঞতার দরকার আছে। তাই এ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পর্কিত যেসব দেশ রয়েছে সেগুলোতে যাওয়ার চিন্তা রয়েছে। এর মধ্যে ভারত, ব্রাজিল, সাউথ আফ্রিকা, থাইল্যান্ডে যাওয়া হতে পারে।
জানা গেছে, এক হাজার সরকারি কর্মকর্তাকে খিচুড়ি রান্না শিখতে বা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাব করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। পরিকল্পনা কমিশন থেকে এর অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে অধিদপ্তর।
ডিপিই ও পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, সফরে গিয়ে কর্মকর্তারা এ ধরনের প্রকল্পের জন্য বাজার থেকে কীভাবে দ্রব্য কেনা হয়, খিচুড়ি রান্নার নিয়ম এবং তা বিতরণের উপায় সম্পর্কে ধারণা নেবেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, ডিপিই, পরিকল্পনা কমিশন এবং বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের কর্মকর্তারা পাঁচ বছরের মধ্যে এই সফরের সুযোগ পাবেন।
ওই প্রকল্পের পরিচালক এবং ডিপিই কর্মকর্তা রুহুল আমিন খান বলেন, এর মাধ্যমে কীভাবে খিচুড়ি রান্না করতে হয় এবং তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হয় সে বিষয়ে তারা ধারণা নিতে পারবেন। এই কর্মসূচির আওতায় সারা দেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হবে। এজন্য বিদেশি প্রশিক্ষণ প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, ডিপিই প্রাথমিকভাবে বিদেশ যাত্রার জন্য পাঁচ কোটি টাকা চেয়েছে। এছাড়া দেশে প্রশিক্ষণের জন্য আরও ১০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত এই রান্না করা খাবার বিতরণ কর্মসূচির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা। এর আওতায় পাঁচ বছর ধরে প্রায় এক কোটি ৪৮ লাখ শিক্ষার্থীকে পুষ্টিকর বিস্কুট ও রান্না করা খিচুড়ি দেওয়া হবে। ৫০৯টি উপজেলার শিক্ষার্থীরা এ খাবার পাবেন।
এ বিষয়ে রুহুল আমিন খান জানান, গত বছর ভারতের কয়েকটি স্কুল তারা পরিদর্শন করেন এবং সেখানে কীভাবে খাবার রান্না হয় সে বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছেন। আরও কর্মকর্তাকে এ ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দিতে চান বলে তিনি জানিয়েছেন।
যা বললেন শিক্ষা সচিব:
খিচুড়ি রান্না ও পরিবেশন শিখতে বিদেশ যাবেন কর্মকর্তারা। আর এতে খরচ হবে প্রায় ৫ কোটি টাকা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন মিডিয়ায় আলোচনার ঝড় বইছে। অবশেষে এ বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন প্রাথমিক শিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেন। তিনি বলেন, খিচুড়ি রান্না শিখতে নয়, প্রাথমিক স্কুলে মিড-ডে মিল কার্যক্রমকে আরও উন্নত করতেই অভিজ্ঞতা অর্জনে কর্মকর্তাদের বিদেশ যাওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এ প্রস্তাবটি পরিকল্পনা কমিশন চাইলে বাতিল করতে পারবে।
মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে বিদেশে খিচুড়ি রান্না শিখতে যাওয়া ইস্যুতে এক ব্রিফিংয়ে সচিব এসব কথা জানান। তিনি আরও জানান, প্রাথমিক স্কুলে ১৯ হাজার ২৯৬ কোটি টাকার মিড-ডে মিল প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে দেওয়া হয়েছে। তাতে তিন দিন বিস্কুট, আর তিনদিন খিচুড়ি বা রান্না করা খাবারের ব্যবস্থার প্রস্তাব করা হয়।