নাগরিক রিপোর্ট: দেশব্যাপী উপকূলীয় এলাকা বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ৬জনের মৃত্যুদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ঘোষণা করেছেন আদালত। বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো: আছাদুজ্জামান বুধবার বেলা দেড়টায় টায় এ রায় ঘোষনা করেন।
রায়ে মিন্নির বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষনে বলা হয়েছে, নিহত স্ত্রী মিন্নিকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার জন্য রিফাত শরীফ কলেজ থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেলে কাছে যান। তখন মিন্নী মোটরসাইকেলের কাছে গিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে সময় নষ্ট করেন। এতে ধারনা করা হচ্ছে তিনি খুনীদের আসার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। খুনীরা যখন রিফাত শরীফকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে তখন মিন্নি খুব স্বাভাবিক গতিতে তাদের পেছনে পেছনে হাটছিলেন বলে আদালত পর্যবেক্ষনে উল্লেখ করেন।
আদালত মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রিফাত ফরাজি সম্পর্কে বলেছেন- ভিডিওচিত্রে নিহত রিফাত শরীফকে সরাসরি কোপাতে দেখা গেছে। অন্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে বিভিন্নভাবে তাকে সহযোগিতা করেছে।
রায়ে মৃত্যদন্ডপ্রাপ্ত অন্যরা হচ্ছে-মো: রাকিবুল হাসনা রিফাত ফরাজি, আল কাইউম রাব্বি আকন, মুহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, মো: রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো: হাসনা। বাকি ৪জনকে খালাস প্রদান করা হয়েছে। এরা হচ্ছেন – মো: মুসা, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো: সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন। এর আগে গত বছরের ২ জুলাই রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সাথে ক্রোসফায়ারে নিহত হন।
বেলা ১টায় বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রায় পড়া শুরু করেন। বুধবার বেলা পৌনে ১২টায় কারাগারে থাকা ৮ আসামী আসামিকে প্রিজনভ্যানে আদালতে আনা হয়। একই মামলার অন্যতম আসামী জামিনে থাকা রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি তার বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের সাথে সকাল পৌনে ৯টায় আদালতে প্রবেশ করেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৬ জুন সকালে উপকূলীয় এলাকা বরগুনা সরকারি কলেজ রোড সম্মুখে স্ত্রী মিন্নির সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর সহযোগীরা। গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল, পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত মারা যান। ওই ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৫/৬জনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন।
এ মামলায় প্রথমে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করেছিলেন নিহত রিফাতের বাবা। পরে তাকে আসামী করায় জেলা পুলিশ গত বছরের ১৬ জুলাই রাতে হত্যায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে স্ত্রী মিন্নিকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। পরদিন ১৭ জুলাই মিন্নিকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড দাবী করলে বিচারক পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে মিন্নি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরন করে। ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্ত হন মিন্নি।