নাগরকি রিপোর্ট: বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) মধ্যরাতে আন্দোলনের নামে বিশৃংখলা করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারা এক চিকিৎসকের বিচার দাবীতে হাসপাতালের গেট আটকে চিকিৎসা সেবা অচল করে দেয়। ফলে চরম বিপাকে পরেন দুরদুরন্ত থেকে আসা রোগীরা। পরে হাসপাতালের পরিচালকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। অভিযোগ রয়েছে, ডায়াগনস্টি সেন্টারের পরীক্ষা-নীরিক্ষার কমিশনের ভাগভাটোয়ারা নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে দ্বন্দের জের ধরে গত ক’দিন ধরে হাসপাতালে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে আকস্মিক ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জরুরি বিভাগের গেট আটকে দিয়ে আন্দোলনে নামেন। এসময় তারা মেডিসিন বিভাগের ইউনিট-৩ এর সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মাসুদ খানের বিচার দাবীতে শ্লোগান দেন।
সম্প্রতি ডা. মাসুদ খানকে কমিশন ভাগাভাগি নিয়ে মারধর করে ইনটার্ন চিকিৎনকরা। এর জেরে ডা: মাসুদ হাসপাতালের পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। পাল্টা হিসেবে ইনটার্ন চিকিৎসকরাও ডা: মাসুদের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দেন পরিচালকের কাছে। কোতয়ালী মডেল থানায় এসব ঘটনায় একটি অভিযোগও দেন ডা: মাসুদ। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধ্য রাতে শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা অচল করে দেয় ইনটার্ন চিকিৎসকরা।
এর ফলে বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে আসা রোগী চরম দুর্ভোগে পরেন। চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকায় হাসপাতালের আন্ত:বিভাগে দুর্ভোগ নেমে আসে রোগীদের মাঝে। খবর পেয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. এস এম সরোয়ারসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তরিকুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ইউনিট-৪ এর সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মাসুদ খান তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তিনি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কমিশন বানিজ্য এবং ইন্টার্নদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন। তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এর সুষ্ঠ বিচার চাইলেও অদ্যাবধি পাননি। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেয়ায় পুলিশ ইন্টার্নদের হয়রানি করছে। এর প্রতিবাদে রাত ১২টায় তারা কাজ বন্ধ রাখেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা শেষে রাত পৌনে ৩টার দিকে দাবী পুরনের শর্তে কাজে ফেরেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
তবে শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ইউনিট-৪ এর সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মাসুদ খান বলেন, কতিপয় ইন্টার্ন চিকিৎসক তার কক্ষে ঢুকে তাকে লাঞ্চিত করেছে। বিষয়টি তিনি পরিচালককে লিখিত জানিয়েছেন। কোতয়ালী মডেল থানায়ও অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
এসব প্রসঙ্গে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন শুক্রবার বলেন, শুক্রবার হাসপাতালের চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরিস্থিতি ঘোলাটে করার জন্য কোন পক্ষ চেষ্টা চালাচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, ইন্টার্নদের দাবীগুলো দেখা হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন ইন্টার্ন চিকিৎসকদের যাতে হয়ারানী না করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে আন্দোলনের নামে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত রাখা যাবে না বলে জানান পরিচালক ডা: বাকির।