বাইডেনের ‍উত্থান যেভাবে

Spread the love

১৯৪২ সালের ২০শে নভেম্বর পেনসিলভ্যানিয়ার স্ক্রানটনে জন্মগ্রহণ করেন জো বাইডেন। তিনি ছিলেন তার চার ভাইবোনদের মধ্যে সব থেকে বড়। তিনি বড় হয়েছেন স্ক্রানটন, নিউ ক্যাসল ও দেলাওয়ারে। তার বাবার নাম জোসেফ রবিনেট বাইডেন এবং মা ক্যাথরিন ইউজেনিয়া ফিনেগান। বাইডেনের মা ছিলেন আইরিশ বংশোদ্ভূত। শিক্ষাজীবনে দেলাওয়ারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়েন বাইডেন। তার রয়েছে সিরাকিউজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ডিগ্রিও। জো বাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীনই বিয়ে করেন নিলিয়া হান্টারকে।
১৯৬৬ সালে বিয়ের পর তাদের ঘরে আসে তিন সন্তান জোসেফ বাইডেন, রবার্ট হান্টার ও নাওমি ক্রিস্টিনা। কিন্তু বিয়ের মাত্র ৬ বছরের মাথায় ১৯৭২ সালে স্ত্রীকে হারান বাইডেন। ক্রিসমাস ট্রি আনতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তার। দুর্ঘটনায় মারা যান তার মেয়ে নাওমিও। ২০১৫ সালে তার বড় ছেলের মৃত্যু হয় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে। জীবনের একটি বড় সময় তিনি স্বজন হারানোর শোকে ডুবে ছিলেন। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ১৯৭৩ সালে বাইডেন বিয়ে করেন জিল ট্রেসিকে। তাদের সংসারে রয়েছে এক মেয়ে। তার নাম অ্যাশলে বেøজার।

শিক্ষাজীবনের শেষেই রাজনীতিতে সক্রিয় হন বাইডেন। ১৯৭০ সালে দেলাওয়ারের নিউ ক্যাসল কাউন্টির কাউন্সিলম্যান নির্বাচিত হন জো বাইডেন। এরপর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ৩০ বছর বয়সের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয় তার। ১৯৭২ সালের নভেম্বরে তৎকালীন জনপ্রিয় রিপাবলিকান সিনেটর স্যালেব বগসের বিপক্ষে লড়াই করে ডেমোক্রেটিক দল থেকে প্রার্থী হন তিনি। মাত্র ৩০ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী পঞ্চম সিনেটর নির্বাচিত হন। দেলাওয়ার থেকে মোট ছয়বার সিনেটর নির্বাচিত হন জো। সিনেটের বিচার কমিটিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা আইনসহ যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি আইন প্রণয়ন করেন তিনি।

২০০৭ সালে বারাক ওবামার সঙ্গে রানিং মেট হিসেবে রাজনীতির সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যান জো বাইডেন। তিনি ছিলেন বারাক ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট। ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৬ সালে ডেমোক্রেট দলের মনোনয়ন পাওয়ার আগেই সরে দাঁড়ান তিনি। রাজনৈতিক জীবনে বাইডেন পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক আমেরিকান সিনেট কমিটিতে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। সিনেটের এই কমিটির সভাপতি হিসেবে ২০১২ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের ইরাক যুদ্ধে যাবার বিষয়টিকে অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্ত ছিল তার ওপর। ইরাক যুদ্ধেও বাইডেনের সমর্থন ছিল জোরালো।

তবে ইরাক যুদ্ধের পর বামপন্থি রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েন বাইডেন। তিনি মার্কিন সেনাদের বিদেশে অবস্থানের বিরোধিতা করতে শুরু করেন। আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনী বৃদ্ধির বিরুদ্ধেও ছিলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *