সৈয়দ জুয়েল: এক বছরেরও বেশি সময় হলো করোনা মহামারির। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর মিছিল থামছেনা। কোন কোন পরিবারে উপার্জনক্ষম ব্যাক্তিটি হারিয়ে অসহায় হয়ে পরছে পুরো পরিবার। শোকের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটাতে জীবন যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরা মানুষগুলোর চোখের জলও গিয়েছে শুকিয়ে। এত লাশের গন্ধে জীবিত মানুষগুলোর মানবিকতা কতটুকু ছুঁতে পেরেছে! ধর্ষন,হত্যা, ঘুষ,দূর্নীতি,অনিয়ম কতটুকু কমেছে!
সরকারি দল বিরোধী দলের ভেতর থেকেও হারিয়ে গেছে বর্ষীয়ান কিছু নেতা। জীবিত নেতারা মৃত নেতাদের কাছ থেকে কতটুকু শিক্ষা নিয়েছে! একদিন তো তারাও রাজপথ কাঁপাতো। ডানে,বামে সু বা কু কর্মীদের জ্বালাময়ী স্লোগানে নেতাদের তৃপ্ত হাসি দেখার সেই কর্মীরাও আজ অনেকে নেই।করোনার মত এক ভাইরাসের কাছে আত্মসমর্পণ করে নিজের আমলনামা নিয়ে হাজির তারা পরপারে। প্রতিনিয়ত চোখের সামনের মৃত্যুগুলো কি আদৌ আমাদের বিবেককে জাগ্রত করে? আদৌ কি নিজেকে সংশোধনের একটু চেস্টা করি আমরা! দলাদলি, অপবাদ, অপপ্রচারের নস্ট খেলা থেকে কি বিরত রাখতে পেরেছি নিজেদেরকে! যদি না-ই পারলাম ঘৃনিত কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে,তাহলে মানুষ নামের দু পায়ের নামকাওয়াস্তে জীবই কি রয়ে গেলাম!
নিষিদ্ধ পল্লীর দেহ ব্যাবসায়ীরাও তো জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে শরীর বিলিয়ে দিয়ে উপার্জন করে-স্বপ্ন দেখে একদিন এ নরক থেকে মুক্তি মিলবে। আমাদের সভ্য সময়াজের দূর্নীতিবাজ আর হীনমন্যতা রোগের মানুষগুলো কি নিষিদ্ধ পল্লীর মানুষগুলোর মত স্বপ্ন দেখে! একদিনে করোনা পজিটিভ,পরের দিন শ্বাস কস্ট, ভেনটিলশন নেওয়ারও ক্ষমতা না থাকায় ক্ষনিকেই মৃত্যু। এত নিকটে মৃত্যু! তারপরও চাহিদা!
যদি স্বাভাবিক মৃত্যুও হয়,আর কত বছর এ পৃথিবীতে আমরা! দশ,বিশ,তিরিশ! পৃথিবী তার আপন গতিতেই চলবে,আপনি,আমি না থাকলে এ পৃথিবীর কোনই ক্ষতি হবেনা,এখানে বিচরন করবে অন্য কোন নতুন মানুষ,তবে মানুষের কর্ম মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে প্রজন্মের পর প্রজন্মের মাঝে,তাই নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে উন্নত মন নিয়ে মানুষের মাঝে ভালবাসার সহিত বেঁচে থাকার কেন বিকল্প নেই।
এক মহামারিতে পৃথিবীর কতই পরিবর্তন হলো-মাস্ক,সামাজিক দূরত্ব থেকে শুরু করে কত কিছু! সুস্থ মানসিকতা আর উন্নত মানবিকতার কি পরিবর্তন ঘটেছে আমাদের! যদি না হয়,সময় কিন্তু খুবই কম…..!!