সৈয়দ জুয়েল:
জীবনের প্রয়োজনে দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দেয়া মানুষগুলো দেশি থেকে হয়ে যায় প্রবাসী। বিদেশে এসে দেশীয় রাজনীতি করার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েনা কেউ-ই। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর যদি সঠিক গনতন্ত্রের চর্চাই থাকতো, তাহলে অনেকে বিদেশে পাড়ি দিত কি-না তার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। যেই অপরিপক্ক রাজনীতির জন্য দেশে মেধা পাচার হয়ে যায়,সেই রাজনীতির জন্যই প্রবাসে এসেও অনেকেই জড়িয়ে পরেন দেশীয় রাজনীতিতে।
যদিও নির্বাচন কমিশনের রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলের বিদেশে কোন শাখা থাকতে পারবেনা,এ মর্মে পরিস্কার বলা আছে।নির্বাচন কমিশনের এ আইনকে তোয়াক্কা না করে অনেক বছর থেকেই বিদেশে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শাখা। এদিক থেকে আওয়ামিলীগ,বি,এন,পি
সবচেয়ে এগিয়ে।
খোদ রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনতন্ত্রেও বিদেশ শাখা বলতে কিছুই নেই। তাহলে বিদেশে কেন বাংলাদেশি রাজনীতি! দলীয় হাই কমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষন,পদবী ব্যাবহার করে পরিচিত হওয়া,দেশে গিয়ে মেয়র থেকে সংসদ সদস্য পদে মনোয়ন পেতে মরিয়া, ছবি বানিজ্য, দেশে ব্যাবসা বানিজ্য নিরাপদ রাখতে করেন দেশীয় রাজনীতি। আবার দলকে ভালবেসে অনেকে কোন ধরনের স্বার্থ ছারাই করছেন রাজনীতি,যদিও এদের সংখ্যা নগন্য।
কিন্তু এ রাজনীতিতে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলে প্রাপ্তি কতটুকু! ইউ,কে,আমেরিকা,ইউরোপ,
মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেই বৃহত রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মীদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়,এমনকি বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোর সামনে কালো পতাকা,স্লোগান,কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যও হরহামেশাই হয়ে থাকে। এর জন্য দেশের দুটো বৃহত্তম দলই সমান ভাবে দায়ী।
উন্নত গনতান্ত্রিক দেশে থেকে উদার হতে পারেনি প্রবাসে বাংলাদেশি রাজনীতি। এক দল আরেক দলকে সহ্য না করার প্রভাব পরছে ব্যাক্তি পর্যায়েও। আর এতে করে অবনতি হচ্ছে প্রবাসে এক ছাতার নীচে মিলেমিশে থাকার। যেহেতু এখানে বেড়ে ওঠা ছেলেমেয়েরা কখনই বাংলাদেশের রাজনীতির চর্চা করার আশা নেই বললেই চলে,তাই বিদেশে এসব সংগঠন কখনই আলো ছড়াতে পারবেনা।
তারপরও নতুন প্রজন্ম যদি বাংলাদেশের রাজনীতিতে আদর্শিক কিছু খুঁজে পেত,হয়তো কিছুটা হত। যেখানে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের অভাব,দলীয় পদে লোলুভ দৃস্টি,পদ না পেয়ে অপপ্রচারের রাজনীতিতে মাঠ গরম থাকে,সেখান থেকে নিজের স্বার্থ হাছিল হলেও দেশ বা জনগনের কোন লাভ নেই।
দেশের আন্দোলন সংগ্রামে বিদেশী রাজনীতি করা ব্যাক্তিরা শশরীরে না থাকতে পারায়-সরকার গঠন বা সরকার পরিবর্তনে গুরত্বপূর্ণ কোন ভূমিকা থাকেনা। তবে সুস্থ ধারার রাজনৈতিক চর্চা থাকলে এ দুটো দলের গ্রহনযোগ্যতা একটু হলেও বাড়তো।
যে দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে দৈত নাগরিকের স্বাদ আমরা নিলাম,সেই দেশের গনতান্ত্রিক চর্চার অভ্যাস যদি আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের মাঝে পৌছে দিতে পারতাম, তাহলেই বলা যেত-প্রবাসে রাজনীতির আসলেই গুরত্ব আছে। যে-ই লংকা যায়,সে-ই যদি হনুমান হয়! তাহলে লংকা হনুমান হতে কে যায়