ইসলামের দৃষ্টিতে ভালবাসা দিবস

Spread the love

১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনস বা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ২৭০ সালে রোমের সম্রাট ছিলেন কর্ডিয়াস। সে সময় ভ্যালেন্টাইন নামে একজন সাধু, তরুণ-তরুণীদের পরিণয়-মন্ত্রে দীক্ষা দিতেন। এ অপরাধে সাধু ভ্যালেন্টাইনের শিরন্ডেদ হয়। পরবর্তীতে ভ্যালেন্টাইন নাম থেকেই এ দিনটির নামকরণ। এ দিবসকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজেও অনেক অনৈতিক কার্যক্রম চলে। যেগুলো ইসলাম সমর্থন করে না। কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘যারা মুমিনদের মাঝে অশ্লীলতা কামনা করে তাদের জন্য আল্লাহ রেখেছেন দুনিয়া ও আখিরাতের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’ সুরা নুর আয়াত ১৯। ভালোবাসা দিবসের নামে ইসলামবহির্ভূত কাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিয়ের আগে তরুণ-তরুণীদের পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ, কথাবার্তা-মেলামেশা, প্রেম-ভালোবাসা ইসলাম ধর্মে হারাম। তবে কাউকে ভালোবাসতে হলে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালোবাসতে হবে। আবার কাউকে ঘৃণা করতে হলেও আল্লাহর জন্য ঘৃণা করতে হবে। এ প্রসঙ্গে হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে শ্রেষ্ঠ আমল হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাউকে ভালোবাসা এবং তাঁরই সন্তুষ্টির জন্য কারও সঙ্গে শত্রুতা রাখা।’ মুসনাদে আহমদ। মূলত ভালোবাসা পবিত্র। মহান রবের পক্ষ থেকে এক বিশাল নিয়ামতও। এ নিয়ামত না পেলে আল্লাহ বান্দাকে, বান্দা আল্লাহকে, নবী উম্মতকে, উম্মত নবীকে, পিতা-মাতা সন্তানকে, সন্তান পিতা-মাতাকে ভালোবাসত না। তাদের মধ্যে আত্মীয়তার নিগূঢ় সম্পর্ক তৈরি হতো না। মানুষ বঞ্চিত হতো বৈধ ভালোবাসার বন্ধন থেকে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসল, আল্লাহর জন্য কাউকে ঘৃণা করল, আল্লাহর জন্য কাউকে দান করল এবং আল্লাহর জন্য কাউকে দান করা থেকে বিরত থাকল সে ব্যক্তি নিজ ইমানকে পূর্ণতা দান করল।’ আবু দাউদ।

মুসলমানদের আনন্দের দিন দুটি। একটি ঈদুল ফিতর অন্যটি ঈদুল আজহা। এগুলো ছাড়া বাকি উৎসবকে ইসলাম নিষেধ করেছে। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খায়বার যাত্রাকালে মূর্তিপূজকদের একটি গাছ অতিক্রম করলেন। তাদের কাছে যে গাছটির নাম ছিল ‘জাতু আনওয়াত’। এর ওপর তীর টানিয়ে রাখা হতো। এটা দেখে কতক সাহাবি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললেন, হে আল্লাহর রসুল! আমাদের জন্যও এমন একটি ‘জাতু আনওয়াত’ নির্ধারণ করে দিন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্ষোভ প্রকাশ করলেন সুবহানাল্লাহ! এ তো মুসা (আ.)-এর জাতির মতো কথা। আমাদের জন্য একজন প্রভু তৈরি করে দিন, তাদের প্রভুর মতো। আমি নিশ্চিত আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, তোমরা পূর্ববর্তীদের আচার-অনুষ্ঠানের অন্ধানুকরণ করবে।’ মিশকাত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির অনুকরণ করবে সে ব্যক্তি সে জাতিরই একজন বলে গণ্য হবে।’ আবু দাউদ। তাই ইসলাম ভালোবাসা দিবস পালনের অনুমতি দেয় না। এসব থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেয়।
লেখক : মুহাদ্দিস, খাদিমুল ইসলাম মাদরাসা, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *