‘আমরা ডাক্তার বানাচ্ছি, মানুষ বানাচ্ছিনা’- ডা. জাফরউল্লাহ

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : বৈশ্বিক মহামারি করোনায় একজনের মৃত্যু হলে সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে একটি পারিবার হত্যার সামিল। এর দায় সরকাকে নিতে হবে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘করোনা জাতীয় জীবনে ভয়াবহতা সৃষ্টি করেছে। করোনায় একজন মানুষের মৃত্যু হয় কিন্তু পুরো পরিবারকে হত্যা করছে সরকার। কারণ, সরকারের অব্যবস্থপনা, জবাবদিহিতার অভাব, কোনো ধরনের পরোয়া না করা। সরকার নির্দিষ্ট বিষয়ে অজ্ঞ লোক দিয়ে সব কিছু চালাচ্ছে। একটা আইসিউতে প্রতিদিনের খরচ ৩০ হাজার- আড়াই লাখ টাকা। ’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘একটি সিরিঞ্জের সুইয়ের ট্যাক্সও ৩১ শতাংশ। এসব পরিবর্তন করতে হবে। ওষুধের দাম বর্তমান দামের তুলনায় এক তৃতীয়াংশে নেমে আনা সম্ভব। অক্সিজেনের উপরেও ভ্যাট ১৯ শতাংশ। ভারতীয় কোম্পানি সময় মতো দ্বিতীয় ডোজের ভ্যক্সিন পাঠাচ্ছে না। কারণ, তাদেরও চাহিদা বেশি। এই জন্য সরকারকে নিজ দেশে উৎপাদনে যেতে বলেছিলাম।’

ড. বিজন কুমার শীলের মতো মানুষের প্রয়োজন আছে উল্লেখ করে তাকে অবিলম্বে ভিসা প্রদানের জন্য সরকারকে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘সবে মাত্র মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে। ৫০ হাজারের মতো পরীক্ষায় পাশ করেছে। তারা ১০ হাজার ভর্তি করছেন। এটা হওয়া উচিৎ ২০ হাজার। আমরা যাদের ডাক্তার বানাচ্ছি কিন্তু মানুষ বানাচ্ছি না।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আপনি যা করবেন, থুথু আপনার গায়ে পড়বে। ভারত আপনাকে রক্ষা করবে না। ভারত জানে কখন আপনাকে ছুড়ে ফেলে দিতে হয়। আপনারা সমঝোতা করেছেন, কী দিয়েছে? মুক্তিযুদ্ধে যতটা সহায়তা করেছে, মুক্ত হওয়ার প্রথম মাসে সেই অর্থ তুলে নিয়েছে ভারত। ’

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সরকারের আগাম প্রস্তুতির অভাব ছিল শুরু থেকেই। যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশও প্রস্তুতির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। করোনার সংক্রমণকে অগ্রাধিকার দিয়ে সর্বশক্তি নিয়োগ করলে প্রথমেই এটাকে মোকাবিলা করা সম্ভব হতো। শুধুমাত্র ভুল পদক্ষেপের কারণে সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। এমনকি দ্বিতীয় ওয়েভ মোকাবিলার জন্যও সরকারের কোনো পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না। ’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘ব্রিটিশ ও সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট যে অনেক মারাত্মক সেটা আমরা ৩/৪ মাস আগে থেকেই জানি। কিন্তু মোদির আগমনই সরকারের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরিকল্পনাবিহীন লকডাউন দিয়ে সরকার করোণাকে আরো বিকেন্দ্রীকরণ করে দিয়েছে।’

করোনা মোকাবিলায় সবাইকে নিয়ে কাজ করতে জাতীয় কমিটি করার প্রস্তাব দেন ভিপি নুর। এ সময় তিনি রাজবন্দীদের মুক্তি দেবার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততোদিন এই সত্য মানতে হবে শুধুমাত্র ভিন্ন মতের কারণে সরকার গণ স্বাস্থ্যের কিটকে অনুমোদন দেয়নি। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে দেশের মানুষকে উপেক্ষা করে বিদেশি অতিথি আনলেন। এরপরই সংক্রমণ বেড়ে গেল।’

শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু গণস্বাস্থ্যের কিটের জরুরি অনুমোদন দেওয়া ও বিজ্ঞানী ডা. বিজন কুমার শীলের দেশে ফিরিয়ের আনার জোর দাবি জানান। করোনার এ মহামারি থেকে উত্তরণের জন্য সবস্তরের নাগরিকদের নিয়ে সরকার জরুরি একটি সর্বদলীয় নাগরিক কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন।

ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে করোনা সংক্রমণের ভয়বহতার প্রেক্ষাপটে করণীয় বিষয়ে নাগরিক সংবাদ সম্মেলনের ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে আরও বক্তব্য দেন- গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকী, ডাকসু’র সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু,নাঈম জাহাঙ্গীর, ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, রাষ্ট্র চিন্তার দিদারুল ভুঁইয়া,পানি বিশেষজ্ঞ ম ইনামুল হক। ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *