বরিশালে ছাত্রদলের বৃহৎ কমিটিতে মাদক ব্যবসায়ী অছাত্র বিবাহিত প্রবাসী চাকুরীজীবি

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : সভাপতি-সাধারন সম্পাদকসহ ৫ সদস্যের বরিশালে জেলা ছাত্রদলের দুই বছর মেয়াদী কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে একবছর আগে। মেয়াদোত্তীর্ন ৫ সদস্যের কমিটি বুধবার রাতে ৪৮৭ সদস্যের পূর্নাঙ্গ কমিটিতে পরিনত করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। যা এ যাবতকালের মধ্যে বরিশালে ছাত্রদলের সর্ববৃহৎ কমিটি। অছাত্র, বিবাহিত, প্রবাসী, চাকুরীজীবী সকল শ্রেণীর পদায়ন হয়েছে ছাত্রদলের কমিটিতে।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠুও ৪৮৭ সদস্যের কমিটি নিয়ে উম্মা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ১৯ আগষ্ট সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক সহ ৫ সদস্যের সুপার ফাইভ কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এ কমিটি এক বছর আগে ৩৩১ সদস্যের পূর্নাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে হস্তান্তর করেন। বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল ৪৮৭ সদস্যের কমিটি প্রকাশ করেছে। অতিরিক্ত ১৫৬ জন কোথা থেকে আসলও তা জেলা সভাপতি-সাধারন সম্পাদকসহ সুপার ফাইভের নেতারাও জানেন না এমনকি ওই ১৫৬ জনকে তারা চেনেনও না।

জানা গেছে, সুপারফাইভ কমিটিতে অনৈক্য থাকায় আরেকটি গ্রুপ পাল্টা কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়। ‍দুই পক্ষকেই খুশি রাখতে বৃহৎ কমিটি দিযেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
সুপার ফাইভ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ী ক্ষুব্ধ কন্ঠে বলেন, গত ৩ বছরে মিছিলে ৫০ জন নেতাকর্মী পাওয়া যায়নি। কিন্ত কমিটিতে এত নেতা কোথা থেকে আসলো’?
সুপার ফাইভের আরেক নেতা যুগ্ন সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম ইমরান বলেন, দীর্ঘ ১৮ বছর পর জেলা ছাত্রদল পূর্নাঙ্গ কমিটি পেয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারা সকলকে সন্তুুষ্ট করতে গিয়ে বিবাহিত, বিতর্কিত অনেককে কমিটিতে পদায়ন করেছেন। তার জানামতে, কমপক্ষে ১০ জন আছেন বিবাহিত। নানামুখী তদবিরে অনেকে কমিটিতে পদায়ন হয়েছেন যাদের জেলার শীর্ষ নেতারা চেনে না, কিম্বা তাদের সম্পর্কে পরিচয় নিয়ে ধারনাও নেই জেলা নেতাদের।
ছাত্রদলের বিভিন্ন সুত্র নিশ্চিত করেছে ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির সহ সভাপতি কাজী সজল সম্প্রতি নগরীতে মাদকসহ গ্রেফতার হন। সহ সভাপতি জাহিদুল ইসলাম মনির এবং মামুন হাওলাদার দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকেন। অপর সহ সভাপতি মনির নাপতি নারী কেলেংকারীর অভিযোগে হিজলায় সমালোচিত। একইভাবে নারী কেলেংকারীতে মেহেন্দীগঞ্জে সমালোচিত আমিনুল ইসলাম রবিনও সহ সভাপতি পদ পেয়েছেন। রাজধানীতে মুদী ব্যবসায়ী এইচএম জসিম উদ্দিন জেলা ছাত্রদলে সহ সভাপতি পদ পেয়েছেন। স্কুলের গন্ডি না পেরুনো রুবেল খান কমলাপুর রেল ষ্টেশনে চাকুরী করলেও তিনিও জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি। আরেক সহ সভাপতি মশিউর রহমান শামিম গাজীপুরে ৮ বছর যাবত চাকরী করেন। পদ পাওয়া আফজাল হোসেন তপু একজন ঠিকাদার।
ঘোষিত কমিটির সহ সভাপতি আসিফ আল মামুন এ কমিটির জন্য দায়ী করেন সুপার ফাইভ কমিটির নেতাদের। তিনি বলেন, সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠুর বিরুদ্ধে পদবানিজ্যের অভিযোগ রয়েছে বহু আগ থেকে। যে কারনে বৃহৎ কমিটিতে সিনিয়র-জুনিয়র সমম্বয় করা হয়নি। অযোগ্যরাও গুরুত্বপূর্ন পদ পেয়েছেন। তবে সভাপতি মিঠু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে বানিজ্যের অভিযোগ তোলা হলেও কেউ প্রমান দেখাতে পারেননি।
জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ী আক্ষেপ করে বলেন, তার সহযোগী হিসেবে ৮০জনকে সহ সাংগঠনিক সম্পাদক পদ দেয়া হয়েছে। সহ সভাপতি ৯৩ জন। তিনি বলেন, বিশাল এ কমিটির বেশীরভাগই ছাত্রদলের সঙ্গে জড়িত নন। একটি মিছিলও অংশ নেননি এমন অনেকেও পদ পেয়েছেন। পদায়ন হওয়াদের মধ্যে প্রবাসী, চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী, এসএসসি পাশ করেনি, নারী কেলেংকারীতে জড়িতরাও রয়েছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বরিশালে কমিটি গঠনে দায়িত্বপ্রাপ্ত বরিশাল বিভাগীয় টিম প্রধান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মাহমুদুল হাসান বাপ্পির মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলে তিনি সারা দেননি। বিভাগীয় টিমের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় যুগ্ন সম্পাদক মিজান শরীফ বলেণ, যারা দীর্ঘ বছরে কমিটি গঠন না হওয়ায় পদবঞ্চিতদের পূর্ন:মুল্যয়ন করা হয়েছে এ কমিটিতে। এটা অনেকটা বিদায়ী পদ। এর মধ্যে অনেক বিবাহিতও আছেন। কমিটির আকার বড় হওয়ায় অসঙ্গতি থাকতে পারে বলে স্বীকার করে এ কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, প্রবাসী, হত্যা মামলার আসামী, মাদক ব্যবসায়ী কেউ থাকলে অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *