নাগরিক ডেস্ক : জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর মৃত্যুতে মহাসচিবের পদ শূন্য হয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)তে। দলটির পরবর্তী মহাসচিব কে হচ্ছেন এ নিয়ে এখন আলোচনা। দলের মহাসচিবের মৃত্যুতে ইতিমধ্যে তিনদিনের শোক ঘোষণা করেছে জাপা।
এর পরেই দলের পরবর্তী মহাসচিবের বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের। যদিও জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ২০/১ (১) ক উপ-ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে দলের চেয়ারম্যান তার মনোনীত ব্যক্তিকে মহাসচিব পদে নিয়োগ দিতে পারেন। গণমাধ্যমে নিজের নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক নেতা এ তথ্য জানিয়েছেন। ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাপার চারজন প্রেসিডিয়াম সদস্য গণমাধ্যমকে জানান, জাতীয় পার্টিকে অনেকেই বলে ‘গৃহপালিত পার্টি’। কিন্তু জাপা এই ধারণা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছে। জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দলটি নতুন রূপে মাঠে নামতে চায়। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলটির সাংগঠনিক কাঠামোয় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। তাই দলটিকে নতুনভাবে সাজানোর উদ্যোগকে নতুনরূপে দেখতে চাচ্ছেন জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের সহ পার্টির শীর্ষ নেতারা। একইসঙ্গে কিছুটা বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
তারা বলেন, জিয়াউদ্দিন বাবলুর মৃত্যু দলের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। এটা কখনোই পূরণ হওয়ার নয়। তবে দল তার নিয়ম মতোই চলবে। বর্তমান মহাসচিবের মৃত্যুর পরই পরবর্তী মহাসচিব হওয়ার জন্য অনেকেই ইতিমধ্যে সক্রিয় হয়েছেন। তবে দলের চেয়ারম্যান যার নামই ঘোষণা করেন সবাই তার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবেন বলে জানান জাপা নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, জাপা নেতাদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন বেশ কয়েকজন। তারা হলেন- কাজী ফিরোজ রশীদ, রুহুল আমিন হাওলাদার, মশিউর রহমান রাঙ্গা, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও সাইদুর রহমান টেপা। এদিকে একাদশ জাতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে ২০১৮ সালের ৩রা ডিসেম্বর মহাসচিব পদ থেকে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে দেন জাতীয় পার্টির তৎকালীন চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। রুহুল আমিন হাওলাদারের জায়গায় মহাসচিব পদে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে নিয়োগ দেয়া হয়। ওই সময় মশিউর রহমান রাঙ্গা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। প্রেসিডিয়াম সদস্যের পাশাপাশি জাপা চেয়ারম্যান অতিরিক্ত দায়িত্ব দেন রাঙ্গাকে। গত বছরের জুলাইয়ে রাঙ্গাকে সরিয়ে দলের মহাসচিব হিসেবে জিয়াউদ্দিন বাবলুর নাম ঘোষণা করেন জিএম কাদের। তবে জাপার পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে কাজী ফিরোজ রশীদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও সাইদুর রহমান টেপা সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জাপা সূত্রে জানা গেছে, দলটির অনেক শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকে নজরদারিতে রাখছেন জাপা চেয়ারম্যান। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কিছু করলে তার বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেয়া হবে। তাই তাদের বিকল্প হিসেবে এরশাদ মুক্তির আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্রনেতাসহ পার্টির মধ্যে ত্যাগীদের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ পদগুলোয় মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া সুবিধাবাদী নেতাদের দলের কার্যক্রম থেকে দূরে সরানো হচ্ছে। আর তৃণমূলে জেলা, উপজেলা, বিভাগীয় শহরের মেধাবী নেতাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সমপ্রতি দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জেলায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। এদিকে দলকে গতিশীল করতে বেশকিছু কেন্দ্রীয় নেতাকে সক্রিয়ভাবে মাঠে অবস্থান করার নির্দেশও দিয়েছেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের।