Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : মাত্র ৩ হাজার ৪৫৭ জন ভোটার মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। এ ওয়ার্ডে গত বুধবার সম্পন্ন হওয়া কাউন্সিলর পদের উপ নির্বাচনে ছিল ভিন্নরকম উত্তেজনা। দুইজন প্রার্থীই আওয়ামীলীগের। তবে দুই প্রার্থীর পেছনে মেহেন্দিগঞ্জ আওয়ামীলীগে ৩ শীর্ষ নেতার লড়াই ছিল বলে জানা গেছে। তারা হলেন- দলের পদ হারানো স্থানীয় সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ এবং এমপি বিরোধী গ্রুপের শীর্ষ নেতা ঢাকা মহানগরের (দক্ষিণ) সাবেক সাধারন সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক পৌর মেয়র কামালউদ্দিন খান। আগামী জাতীয় নির্বাচন লক্ষ রেখে শক্তি জানান দেয়ার লড়াইয়ে ছিলেন তারা। পৌর ওয়ার্ড নির্বাচন শেষে তারা নতুন লড়াইয়ে নেমেছেন জেলা পরিষদের সদস্য পদ নিয়ে।

স্থানীয় আওয়ামীলীগের বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে জানা জানা যায়, স্থানীয় সরকার পর্যায়ের সব নির্বাচনে বরিশাল- ৪ আসনের অধীন মেহেন্দিগঞ্জ ও হিজলা উপজেলায় এমপি পঙ্কজ ও তার বিরোধীরা পাল্টাপাল্টি প্রার্থী দেয়ায় উত্তাপ-উত্তেজনাপূর্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে এমপি পঙ্কজ নাথ দলৗয় পদ হারানোর পর বুধবারে একটি ওয়ার্ড নির্বাচন ছিল আরও ভিন্ন মেজাজের। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শক্তি জানান দেয়ার নির্বাচন। দিনশেষে ৯১ ভোট ব্যবধানে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন এমপি পঙ্কজ সমর্থিত প্রার্থী আলী আবদুল্লাহ দোলন।

নেতাকর্মীদের একাংশের সঙ্গে বিরোধের জেরে গত মাসের প্রথম সপ্তাহে দলীয় পদ হারান পঙ্কজ নাথ এমপি। এরপরে প্রথম নির্বাচনে স্থানীয়ভাবে কোনঠাসা পঙ্কজ নাথের সমর্থনে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে এ বিজয় মেহেন্দিগঞ্জের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এরইমধ্যে নতুন করে হিসাব নিকাশ চলছে আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠব্য জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে। দুই উপজেলাতে এমপি পঙ্কজ ও তার বিরোধীদের সমর্থিত প্রার্থী রয়েছে।
স্থানীয় সুত্রগুলো জানায়, সমর্থিত প্রার্থী ওমায়ের আহমেদের প্রচারে ঢাকা থেকে এসে উঠান বৈঠক করেন মেহেন্দিগঞ্জের সন্তান শাহে আলম মুরাদ। এমপি বিরোধী সবস্তরের নেতাকর্মী সর্বশক্তি প্রয়োগ নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন।

নবনির্বাচিত কাউন্সিলর আলী আব্দুল¬াহ দোলন বলেন, আমি পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি। আমার প্রতিদ্বদ্বির দলীয় পদ নেই। আমি এমপি সমর্থক হওয়ায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের নেতৃত্বে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মাহফুজ আলম লিটন, পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন খানসহ জেলা আওয়ামীগ নেতারা আমার বিরুদ্ধে প্রচারনায় অংশ নিয়েছিলেন। এখন তারা জেলা পরিষদের একজন প্রার্থীকে নিয়ে মাঠে নেমেছেন।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন খান বলেন, উমায়ের আহমেদ আওয়ামীলীগ বা অঙ্গ সংগঠনের কোন পদে নেই। কিন্ত অপর প্রার্থী আলী আবদুল্লাহ পঙ্কজ নাথ এমপির অনুসারী হওয়ায় তাকে পরাজিত করতে আমরা উমায়েরের পক্ষে মাঠে ছিলাম। ‘আমরা একসঙ্গে বেহেস্তে গেলেও সেখানে পঙ্কজের বিরোধীতা করব’- মন্তব্য করে কামাল উদ্দিন খান বলেন, আলী আবদুল্লাহর স্বেচ্ছাসেবক লীগ কমিটি অবৈধ। ।
এদিকে ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠব্য জেলা পরিষদ নির্বাচনে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় সদস্য প্রার্থী ৫ জন। তার মধ্যে রাকিব মাহমুদ তালুকদার এমপি পঙ্কজ সমর্থিত এবং তার বিরোধীপক্ষের ৩ জন প্রার্থী যথাক্রমে বর্তমান সদস্য জিল্লুর রহমান, মিজানুর রহমান ও মিনু মাষ্টার। আরেকজন হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ফকরুদ্দিন রাজা। অপরদিকে হিজল উপজেলায় এমপি সমর্থিত প্রার্থী ফখরুল ইসলাম তার বিরোধীরা সমর্থন করেছে কাজী কামরুজ্জামান সাইলুকে। উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক পন্ডিত সাহাবউদ্দিন আহমেদ প্রার্থী হলেও তিনি আছেন স্বতন্ত্র ভূমিকায়। সমর্থিত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে পঙ্কজ নাথ এমপি ও তার বিরোধীরা ভেতরে ভেতরে ব্যাপক প্রস্ততি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

নিজেদের গ্রুপে মেহেন্দিগঞ্জে একাধিক প্রার্থী প্রসঙ্গে কামাল উদ্দিন খান বলেন, ‘আমরা একক প্রার্থীর জন্য সমঝোতা চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে সমঝোতার সম্ভাবনা কম।

এমপি পঙ্কজ নাথ বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে হিজলা ও উপজেলায় প্রার্থী মনোনয়নে জেলা আওয়ামীলীগ সব সময় তৃনমূলের মতামত উপেক্ষা করে অজনপ্রিয় লোকদের প্রার্থী করে। তিনি স্থানীয় সাংসদ হিসাবে তৃনমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে থাকেন। এতে নৌকার প্রার্থী পরাজিত হওয়ার জন্য জেলা আওয়ামীলীগই মুলত দায়ী। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দুটি উপজেলা পরিষদ ও দুই উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৪টিতে তার সমর্থিত প্রার্থীকে জয়ী করে তৃনমূলে তার সমর্থনের প্রমান দিয়েছেন। ##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *