নাগরিক রিপোর্ট : মালয়েশিয়া প্রবাসী যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার ১১ আসামীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব- ৮। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কয়েকটি মোবাইল, নগদ টাকা, ভোটার আইডি কার্ড, এটিএম কার্ডসহ বিভিন্ন সামগ্রী। গতকাল বুধবার দুপুর ১টায় বরিশাল নগরের রূপাতলীস্থ র্যাব- ৮ এর সদর দপ্তরের আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-৮ এর পরিচালক (সিও) লেফটেনেন্ট কর্নেল মাহামুদুল হাসান।
লিখিত বক্তব্যে লেফটেনেন্ট কর্নেল মাহামুদুল হাসান জানান, গত ২৬ ডিসেম্বর (২০২২) শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ঠাকুরকান্দি এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দানেশ সরদার (৩৫) নামের এক মালয়েশিয়া প্রবাসী যুবককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সোনা মিয়া ২৭ ডিসেম্বর নড়িয়া থানায় ৫৭ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়, নিহত দানেশ সরদার ১০ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় ছিলেন। ঘটনার তিন মাস আগে তিনি দেশের আসেন এবং পূর্ব বিরোধের জের ধরে আসামী পক্ষের সঙ্গে তার নতুন করে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে ২৬ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে ঠাকুরকান্দি গ্রামে লোকমান আকনের বাড়ির সামনে পূর্ব থেকে ওঁত পেতে থাকা আসামীরা ধারালো অস্ত্র এবং লাঠিসোটা দিয়ে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে দানেশ সরকারকে হত্যা করে। হত্যাকান্ড নিশ্চিত হওয়ার পর আসামীরা পালিয়ে যায়।
হত্যাকান্ড এবং মামলা দায়েরের পর র্যাব-৮ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং হত্যা মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে মাদারিপুর ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কমান্ডার কে এম শাইখ আকতারের নেতৃত্বে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগরের শাহাবাগ এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে শাহবাগ থেকে মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী নড়িয়া উপজেলার ঠাকুরকান্দি এলাকার শাহিন মোড়ল (২৪) ও একই এলাকা থেকে আসামী নাসির বেপারী (৩২), কামাল কাজী (২৭), আওয়ার মালত (৩৫), জব্বার হাওলাদার (৪৫), মিলন বেপারী (৪০), ডিটু বেপারী (৩৫) কে গ্রেফতার করা হয়। এই আসামীদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী একই দিন ঢাকা মহানগরের শাহবাগ থানার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা থেকে জনি মোড়ল (২২), রাসেল মালত (৩০), ওয়াহেদ খান (২২) ও আসামী দেলোয়ার কাজী (৩৫) কে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব- ৮ এর পরিচালক লেফটেনেন্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান আরো বলেন, হত্যাকান্ডের পর গ্রেফতার হওয়া আসামীরা পলাতক ছিল। গ্রেফতারের আগে তারা নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করতে ঢাকার শাহবাগে একত্রিত হয়েছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অন্য আসামীদের গ্রেফতার করতে র্যাব-৮ এর গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানায় হন্তান্তর করা হবে। ##