সৈয়দ জুয়েল। : এ নিয়ে বঙ্গবাজারে তিনবার আগুন লাগলো। এদিক দিয়ে হ্যাট্রিক করলো বঙ্গ। এর আগের দু’বার থেকে কোন শিক্ষা নেয়নি ব্যাবসায়ী ও সরকার। প্রতিবারই একই চিত্র,একই কান্না,এভাবেই চলছে।
বঙ্গ বাজারের মত যত মার্কেট বাংলাদেশে রয়েছে,এ মার্কেটগুলো অনুমোদন পায় কিভাবে! এর অনুমোদন দেয় কারা! নেই অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র, নেই ফায়ার এলার্ম,নেই আগুন থেকে বাঁচতে বহির্গমণ পথ, আগুন নেভাতে নেই প্রশিক্ষন,কিছুই নেই এসব মার্কেটগুলোয়। যারা আজ সব হারালো,তারাই সবচেয়ে বেশি দায়ী এ দিনটির জন্য।
প্রতিটি দোকানে যদি ফায়ার এলার্ম ও অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র থাকতো তাহলে এ দূর্ঘটনা প্রাথমিক স্তরেই থেমে যেত। লক্কর ঝক্কর দোকান আর নিয়ম না মেনে তা পরিচালনা করলে -এরকম ঘটনা ঘটতেই থাকবে। শুধু সরকার আর আল্লাহর দিকে তাকিয়ে থাকলে তো কাজ হবেনা। আল্লাহ তাদেরকে সাহায্য করেন,যারা নিজেরা নিজেদেরকে সাহায্য করে। একটি ফায়ার এলার্ম ও একটি অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের দাম অনেক কম। এই আধুনিক যুগে এগুলো ছাড়া কোন সভ্য মানুষরা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান খোলেনা।
আবার ওদিকে ফায়ার সার্ভিসের অবস্থাও ভঙ্গুর। অভিযোগ উঠেছে আগুন লাগার প্রথমেই যদি ফায়ার সার্ভিস তাদের দায়িত্বটা পালন করতো, তাহলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান অনেক কম হত। যদি সত্যিই এটি হয়ে থাকে তাহলে তখনকার দায়িত্বে যারা ছিলো তাদেরকে বরখাস্ত জরুরী।
বঙ্গ বাজারের ব্যাবসায়ীরা পথে বসে গেছে সত্য, এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে অনেক সময় লাগবে, তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ওঠার আগেই যেন আবার আগের ভুলে আবারও পুড়ে ছারখার যেন না হয় ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। আর সরকারে যারা এসব দেখার দায়িত্বে আছেন,তাদের কাছে অনুরোধ থাকবে কোন ধরনের দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে এসব প্রতিস্ঠানের অনুমোদন যেন না দেয়া হয়৷
একদিন এমনও হতে পারে আপনি যে প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদন দিলেন ওটার নীচেই চাপা পরে মরে গেলো আপনার সন্তান,বাবা, মা,স্ত্রী! তখন আপনিও এসব ব্যাবসায়ীর মত আহাজারি করবেন। এখনও ভাবেন ঘুষ, দুর্নীতি করে এরকম প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দিয়ে পাহাড় সমান সম্পদ করবেন, না আপনার হাতের দেয়া অনুমোদনে আপনার পরিবারের জন্য অভিশাপ কিনে নিবেন! সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব আপনার।
২০১৯ এ এই বঙ্গবাজার মার্কেটটিকে ঝুকিপূর্ণ মার্কেট ঘোষনা করে। প্রশ্ন হলো ঝুকিপূর্ণ থাকার পরেও কোন অদৃশ্যবলে ২০২৩-এ এসে ঠেকলো! প্রায় পঞ্চাশ হাজার কর্মী যে বেকারত্বের কবলে পরলো তাদের সংসারের দায়িত্ব কে নিবে! আর ক্ষতির পরিমান যে প্রায় সাতশো কোটি টাকা হলো,এই ক্ষতি কিভাবে কাটিয়ে উঠবে ব্যাবসায়ীরা! প্রশ্ন অনেক উত্তর কে দিবে!